—প্রতীকী ছবি।
ফের শিশু বিক্রির ঘটনা নিয়ে বিতর্ক ত্রিপুরায়। ধলাই জেলার গন্ডাছড়া মহকুমায় মাত্র ৫ হাজার টাকায় শিশু বিক্রির অভিযোগ উঠেছিল। মহকুমাশাসক প্রথমে ঘটনাটির কথা স্বীকার করেছিলেন। কিন্তু এর পরে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী দাবি করেছেন, এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা বলেছেন, ‘‘শিশুটিকে সঙ্গে সঙ্গে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ত্রিপুরায় আগে বাম শাসনে প্রায় প্রতিদিন এই ধরনের ঘটনা ঘটত। এখন হঠাৎ করে এই শিশু বিক্রির ঘটনা সামনে আসে। এটা একটি সামাজিক সমস্যা। এ নিয়ে বিরোধীরা রাজ্যে অহেতুক সমস্যাসৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন বলে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ।
এর আগে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী মুখ্যসচিবকে একটি চিঠিতে ঘটনাটি জানিয়েছিলেন। তিনি লেখেন, গন্ডাছড়া মহকুমার তারাভন কলোনির বাসিন্দা মর্মরী ত্রিপুরা ২২ মে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। আগে তাঁর চার সন্তান ছিল। কিছু দিন আগে তাঁর স্বামী আত্মহত্যা করেন। এই অবস্থায় সংসার চালাতে না পেরে ওই মহিলা প্রথমে রেশন কার্ড বন্ধক রাখেন। স্বামীর মৃত্যুর সময়ে তিনি ছিলেন গর্ভবতী। তিনি স্থানীয় হাসপাতালে গর্ভপাত করাতে গেলেও ভ্রূণহত্যা করতে রাজি হননি চিকিৎসক। ওই চিকিৎসকই মহিলার চিকিৎসার যাবতীয় খরচের দায়িত্ব নেন। কিন্তু শিশুটি জন্মানোর পরেই মা তাকে বিক্রি করে দেন। মুখ্যসচিবকে এই সংক্রান্ত একটি ভিডিয়ো পাঠিয়ে জিতেন্দ্র অনুরোধ করেন, শিশুটিকে ফিরিয়ে এনে রাজ্য যেন মাকে আর্থিক সাহায্য করে। মুখ্যসচিব তাঁকে পদক্ষেপের আশ্বাস দেন বলেও বিরোধী দলনেতা জানান।
যদিও খাদ্যমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেন, বিরোধী দলনেতার অভিযোগটি ‘বিভ্রান্তিমূলক ও অসত্য’। কারণ ওই মহিলা আসলে সদ্যোজাত শিশুটিকে এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে দত্তক দিতে চেয়েছিলেন। আইনি জটিলতায় তা সম্ভব হয়নি। সুশান্তের দাবি, জেলা প্রশাসনও শিশু বিক্রির ঘটনা ঠিক নয় বলে জানিয়েছে। তবে গত ২৫ মে গন্ডাছড়ার মহকুমাশাসক অরিন্দম দাস শিশু বিক্রির ঘটনাটি স্বীকার করার পাশাপাশি বলেছিলেন, ইতিমধ্যেই মায়ের কাছে শিশুটিকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং কিছু আর্থিক সাহায্যও করা হয়েছে। সমাজকল্যাণ দফতরের সহযোগিতায় মহিলার কাউন্সেলিং করা হচ্ছে।প্রশাসনিক পদক্ষেপের জন্য মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা।