—প্রতীকী ছবি।
আগামী ২০২৯ সাল থেকে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন একসঙ্গে করার সুপারিশ করে রিপোর্ট জমা দিয়েছে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের এক দেশ এক ভোট সংক্রান্ত কমিটি। কমিটির অধিকাংশ সদস্য একসঙ্গে ভোটের পক্ষে রায় দিলেও, কিছু ক্ষেত্রে সমালোচনামূলক অবস্থান নিতে দেখা গিয়েছে সংবিধান বিশেষজ্ঞ সুভাষ কাশ্যপকে।
এক দেশ এক ভোট আইন আনার পিছনে কেন্দ্রের মূল যুক্তি, একসঙ্গে ভোট হলে কোষাগারের খরচ কম হবে। যদিও সুভাষ কাশ্যপের মতে, নির্বাচনের সময়ে প্রার্থী, বাণিজ্যিক সংস্থা, রাজনৈতিক দল যে খরচ করে তা সরকারের খরচের তুলনায়
অনেক বেশি, তার কোনও হিসাব থাকে না এবং তা কালো টাকার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে। এ
বিষয়ে সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, সংবিধান অনুযায়ী লোকসভা, রাজ্যসভা ও রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন সংক্রান্ত আইন আনার ক্ষমতা রয়েছে সংসদের। যা মানতে বাধ্য রাজ্যগুলি। যদিও কাশপ্যের মতে, সংবিধানের মূল ভাবনা রাজ্যগুলির হাতেই বেশি ক্ষমতা থাকার পক্ষে। ভারতের সংবিধান গঠনগত দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রীয়, কিন্তু সংবিধানের আত্মা কেন্দ্রভিত্তিক। যা স্বাভাবিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনের কথা বলে, কিন্তু জরুরি অবস্থার ক্ষেত্রে শাসনভার কেন্দ্রের হাতে ন্যস্ত হয়।
কাশ্যপের মতে, ভারতের সংবিধানকে যুক্তরাষ্ট্রীয় বা কেন্দ্রীয়—কোনও একটি ছাঁচের মধ্যে আটকানো সম্ভব নয়। কারণ, রাজ্যগুলির ভূমিকা একেবারে উপেক্ষা করা যায় না। কিছু ক্ষেত্রে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা থাকলেও, কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রগুলিতে কোনও আইন রাজ্যের ছাড়পত্র ছাড়া প্রয়োগ করা সম্ভব নয়।
ভবিষ্যতে প্রথমে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন ও তার পরে ওই দুই নির্বাচনের সঙ্গেই পুর-পঞ্চায়েত নির্বাচন একসঙ্গে করার প্রস্তাব
দিয়েছে কমিটি। যা রাজ্যের ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ বলে দাবি করেছেন অধিকাংশ বিরোধী দল। সেই অভিযোগ অনেকাংশেই মেনে নিয়ে সুভাষ কাশ্যপ বলেছেন, সংবিধান সংশোধন করে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়াই যেতে পারে। কিন্তু তা এখনই না করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
তবে লোকসভা ও বিধানসভার জন্য এক ভোটার তালিকা তৈরি রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা বলে অনেকে যে যুক্তি দিয়েছেন, তা অবশ্য মানতে চাননি কাশ্যপ। তাঁর মতে, নাগরিকত্ব কেন্দ্রীয় বিষয়।