—প্রতীকী ছবি।
বিজেপির মতো ধনী রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে লোকসভা নির্বাচন লড়তে হবে। এ দিকে সিন্দুকে টান পড়েছে। নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে শিল্পপতিদের চাঁদার বেশির ভাগই বিজেপির ঝুলিতে যাচ্ছে। আয়ের নিরিখে বিজেপি তো বটেই, তৃণমূলের থেকেও পিছিয়ে পড়ছে কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে মহাত্মা গান্ধীর পথে হেঁটে কংগ্রেস ঘরে ঘরে গিয়ে কৌটো নাড়িয়ে অর্থ সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিল।
কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ অজয় মাকেন ঘোষণা করেছেন, কংগ্রেস গোটা দেশে ‘ক্রাউডফান্ডিং’-এর পথে অর্থ সংগ্রহ অভিযান শুরু করবে। যার নাম ‘ডোনেট ফর দেশ’। একশো বছরের বেশি আগে মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধী স্বাধীনতা আন্দোলনের খরচ জোগাড়ের জন্য ‘তিলক স্বরাজ ফান্ড’ চালু করেছিলেন। ১৯২০-২১ সালে গান্ধীজির সেই অভিযান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েই কংগ্রেস অর্থ সংগ্রহ অভিযান শুরু করছে। ১৮ ডিসেম্বর বা সোমবার থেকেই অনলাইনে এই অভিযান শুরু হবে। দলেরই নেতা, কর্মী, সমর্থক ও জনগণের কাছে আর্থিক সাহায্যের অনুরোধ জানানো হবে।
২৮ ডিসেম্বর, কংগ্রেসের ১৩৮-তম প্রতিষ্ঠা দিবস থেকে ঘরে ঘরে গিয়ে অর্থ সংগ্রহ অভিযান শুরু হবে। ১৩৮-তম প্রতিষ্ঠা দিবস বলে ১৩৮-এর গুণিতক, যেমন ১৩৮ টাকা, ১৩৮০ টাকা বা ১৩৮০০ টাকা পরিমাণ চাঁদা দেওয়ার অনুরোধ করা হবে। ওই দিনই নাগপুরে বিশাল জনসভা করে কংগ্রেস লোকসভা নির্বাচনের প্রচারও শুরু করে দিতে চাইছে। দলের প্রতিটি কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবককে অন্তত দশটি বাড়িতে গিয়ে চাঁদা তোলার লক্ষ্য দেওয়া হচ্ছে।
কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, বিজেপি যে পরিমাণ অর্থ নিয়ে ভোটের প্রচারে নামছে, তার সঙ্গে যুঝতে হলে যথেষ্ট অর্থ প্রয়োজন। কিন্তু কেন্দ্রে ও বেশির ভাগ রাজ্যে ক্ষমতায় থাকার সুবাদে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে শিল্পপতিদের চাঁদার অধিকাংশই বিজেপির ঘরে ঢুকছে। ২০২১-২২-এ বিজেপির আয় ছিল মোট প্রায় ১৯১৭ কোটি টাকা। কংগ্রেসের আয় ছিল মাত্র ৫৪১ কোটি টাকা, তৃণমূলের ৫৪৫ কোটি টাকা আয়ের থেকেও কম। ওই অর্থ বছরে আটটি জাতীয় রাজনৈতিক দল মোট ৭৮০ কোটি টাকা অনুদান পেয়েছিল। তার ৮০ শতাংশই পেয়েছিল একা বিজেপি। এর অর্ধেকের বেশি এসেছিল নির্বাচনী বন্ড থেকে। বিজেপি পেয়েছিল মোট ৬১৪ কোটি টাকা। সেই তুলনায় কংগ্রেসের জুটেছিল মাত্র ৯৫ কোটি টাকা। শিল্পমহল বিজেপিকেই বেশি পরিমাণে আর্থিক সাহায্য করছে বলেই কংগ্রেস আমজনতার দুয়ারে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।