কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। —পিটিআই।
বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শনিবার সমস্ত টেলিভিশন (টিভি) বিতর্কে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কংগ্রেস। এই প্রসঙ্গে কংগ্রেসের প্রচার এবং জনসংযোগ বিভাগের প্রধান পবন খেড়া বলেছেন, “এই সময় আমাদের সকলের একত্রিত হয়ে দুর্ঘটনায় স্বজনহারা পরিজনদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।” এর পাশাপাশি, তিনি একটি টুইট করে ওই পরিবারগুলিকে সমবেদনাও জানিয়েছেন।
বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনার আঁচ পড়েছে জাতীয় রাজনীতিতেও। রেলের ‘গাফিলতি’ নিয়েই ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে বেশ কয়েকটি বিরোধী দল। এই বিষয়গুলি নিয়ে অন্য দিনের মতোই সর্বভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যমে আলোচনায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদের। কিন্তু ‘শোকের আবহে’ তা থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। কংগ্রেস সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে তাদের তরফে কোনও রাজনৈতিক বার্তা যাক, তা তারা চাইছে না। আপাতত ধৈর্য ধরারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
তবে দুর্ঘটনার কারণ এবং রেলের ভূমিকা নিয়ে যে একাধিক প্রশ্ন উঠছে, সে দিকে ইঙ্গিত করে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে আমাদের অনেক প্রশ্ন করার আছে। কিন্তু উদ্ধারকাজকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। তত ক্ষণ অবধি অপেক্ষা করা যেতেই পারে।” এর পাশাপাশি একটি বিবৃতি প্রকাশ করে খড়্গে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজে হাত লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন। বিভিন্ন রাজ্য থেকে বহু কংগ্রেস কর্মী বালেশ্বর গিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার সন্ধ্যা নামার ঠিক আগে বালেশ্বর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরের বাহানগা বাজার স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস। জানা যায়, একটি মালগাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে ট্রেনটির। দুর্ঘটনার অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন মালগাড়ির উপরে উঠে যায়। ঠিক সেই মুহূর্তে পাশের লাইন দিয়ে আসছিল ডাউন বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। ডাউন লাইনে পড়ে থাকা করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত কামরাগুলির উপর এসে পড়ে বেঙ্গালুরু-হাওড়া ডাউন ট্রেনটি। সঙ্গে সঙ্গে হাওড়াগামী সেই ট্রেনটির দু’টি কামরাও লাইনচ্যুত হয়। এই ঘটনায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েই চলেছে নিহত এবং আহতের সংখ্যা। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রেলসূত্রে মৃতের সংখ্যা ২৮৮ বলে জানানো হয়েছে। আহত ৮০৩ জনেরও বেশি। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।