রাহুলের উত্তরসূরি হবেন কে? সভাপতি বাছতে কংগ্রেস বসছে শনিবার

শীর্ষ নেতাদের একাংশ বলছেন, কোনও নাম নিয়ে এখনও ঐকমত্য হয়নি। দেখা যাক, আগামী এক সপ্তাহে জল কোন দিকে গড়ায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৯ ০২:৪৪
Share:

—ফাইল চিত্র।

রাহুল গাঁধীর উত্তরসূরি স্থির করতে অবশেষে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকল কংগ্রেস। রাহুলের ইস্তফার দু’মাস কেটে যাওয়ার পরে আগামী শনিবার দিল্লির এআইসিসি দফতরে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে।

Advertisement

কিন্তু প্রশ্ন হল, কংগ্রেস সভাপতি পদে রাহুলের উত্তরসূরি হবেন কে?

শীর্ষ নেতাদের একাংশ বলছেন, কোনও নাম নিয়ে এখনও ঐকমত্য হয়নি। দেখা যাক, আগামী এক সপ্তাহে জল কোন দিকে গড়ায়। ওয়ার্কিং কমিটিতে রাহুল উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বৈঠকে তিনি এলে তাঁকে আরও এক বার সভাপতি পদে থেকে যেতে অনুরোধ করা হবে। রাহুল না-মানলে কাউকে অস্থায়ী সভাপতি হিসেবে বেছে নেওয়া হবে। যদি এ ক্ষেত্রেও কোনও নাম নিয়ে সবাই একমত না-হন, তা হলে নেতাদের একটি গোষ্ঠী তৈরি করা হবে। ওই গোষ্ঠীর উপরেই তখন অন্তর্বর্তী সভাপতি বাছাইয়ের দায়িত্ব থাকবে। তবে রাহুল ইস্তফা দিলেও ওয়ার্কিং কমিটি যত ক্ষণ না তা মঞ্জুর করছে, তত ক্ষণ তিনিই সভাপতি।

Advertisement

কংগ্রেসের সংগঠনের দায়িত্বে থাকা নেতা কে সি বেণুগোপাল নিজেই আজ সকালে ওয়ার্কিং কমিটির নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেন। ক’দিন আগে বিদেশ থেকে ফিরে রাহুলই দ্রুত এই বৈঠক ডাকতে বলেছিলেন। এরই মধ্যে আজ মুম্বই কংগ্রেসের প্রধান মিলিন্দ দেওরা বলেন, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং সচিন পাইলটের মতো তরুণ, যোগ্য ও সাংগঠনিক ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিকে নতুন কংগ্রেস সভাপতি করা উচিত। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহও কোনও তরুণ মুখকে সভাপতি করার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। রাহুল সভাপতি থাকতে না-চাওয়ায় প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাকেও দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

কিন্তু প্রিয়ঙ্কা নিজেই সভাপতি পদ নিতে চাননি। গত ২৫ মে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুল বলেছিলেন, গাঁধী পরিবারের বাইরে থেকেই কাউকে খুঁজতে হবে। এমনকি প্রিয়ঙ্কাকেও টানা যাবে না। যদিও আজ প্রবীণ কংগ্রেস নেতা কর্ণ সিংহ বলেছেন, সভাপতি হিসেবে দলকে একজোট রাখতে পারবেন ‘বুদ্ধিমতী’ প্রিয়ঙ্কা। উত্তরপ্রদেশ সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে সম্প্রতি সোনভদ্রে হিংসায় নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা। তা মনে করিয়ে কর্ণ বলেন, ‘‘প্রিয়ঙ্কার ব্যক্তিত্ব ও বক্তৃতায় উজ্জীবিত হবেন কর্মীরা।’’ প্রশ্ন হল, গাঁধী পরিবার তা মানবে কি? রাহুল যখন বিদেশে ছিলেন, সেই সময় এক দল নেতা সনিয়া গাঁধীর দ্বারস্থ হয়ে তাঁকেই দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করেন। সনিয়া সে প্রস্তাব খারিজ করে দেন। গাঁধী পরিবারের তিন সদস্যই নতুন সভাপতি পদে কারও নাম প্রস্তাব করতেও রাজি হননি।

যার ফলে এর মধ্যে আহমেদ পটেল-অশোক গহলৌতদের মতো নেতারা কোনও প্রবীণ নেতাকেই দায়িত্ব দিতে তৎপর হয়েছিলেন। গহলৌত, সুশীলকুমার শিন্দে, মল্লিকার্জুন খড়্গে, বেণুগোপাল, মুকুল ওয়াসনিকের মতো অনেকের নাম নিয়েই কংগ্রেস শিবিরে জল্পনা চলছে গত দু’মাস ধরে। কিন্তু তাতে বেঁকে বসেন নবীন নেতারা। তাঁরা অনেকেই আহমেদ পটেলদের ঘরোয়া আলোচনার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। আজ এআইসিসি দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে শশী তারুর ফের বলেন, ‘‘রাহুল গাঁধীর সঙ্গে আমরা দেখা করেছিলাম। সেই সময় তিনি দলে দায়বদ্ধতার সংস্কৃতি চালু করার কথা বলেন। যদি রাহুল সেটি করতে পারেন, সকলের করা উচিত। সেই কারণে এখনই এক জন অন্তর্বর্তী সভাপতি নিয়োগ করে বাকি সব পদের জন্যও নির্বাচন হওয়া উচিত। তা হলেই কংগ্রেসের বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরে আসবে।’’ তারুরও চান, রাহুলের অনুপস্থিতিতে আজ যে প্রবীণ নেতারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তাঁদেরও বদলানো হোক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement