প্রধানমন্ত্রীর গদিতে নয় বছর পূর্ণ করা নরেন্দ্র মোদীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল কংগ্রেস। ফাইল চিত্র।
সাংবাদিক সম্মেলন করতে হবে। দু’পাশে টেলিপ্রম্পটার থাকলে চলবে না। প্রধানমন্ত্রীর গদিতে নয় বছর পূর্ণ করা নরেন্দ্র মোদীকে আজ এমনই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল কংগ্রেস।
কর্নাটকে হারের পরে বিজেপি শীর্ষনেতৃত্ব মনে করছেন, এর পরে দক্ষিণ ভারতের আর এক রাজ্য তেলঙ্গানাতেও বিজেপির লড়াই কঠিন হয়ে গেল। তাই কর্নাটকে কংগ্রেসের কাছে হারের ছায়া কাটাতে বিজেপি শীর্ষনেতৃত্ব মোদী সরকারের নবম বর্ষপূর্তিকে উপলক্ষ করে সরকারের সাফল্যের ঢাক পেটাতে প্রচারে নামছেন। কংগ্রেসকে ধাক্কা দিতে রাজস্থানের বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করে তাঁর সরকারের নবম বর্ষপূর্তিতে মরুরাজ্যের অজমেঢ়ে জনসভা করতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। পাল্টা হিসেবে কংগ্রেস আজ প্রধানমন্ত্রীকে ন’টি প্রশ্ন করে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। তার অন্যতম হল, নরেন্দ্র মোদী এ বার একটা সাংবাদিক সম্মেলন করে টেলিপ্রম্পটার ছাড়া যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দিন। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বিজেপির নয় বছরের সরকারকে আক্রমণ শানিয়ে বলেছেন, ‘‘মিথ্যে প্রতিশ্রুতি আর জনতার দুর্দশার উপরে বিজেপি নয় বছরের ইমারত খাড়া করেছে। মূল্যবৃদ্ধি, ঘৃণা ও বেকারত্ব— প্রধানমন্ত্রী, আপনি এই তিন ব্যর্থতার দায় নিন।’’ তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন আজ মোদী সরকারের ন’টি ব্যর্থতা তুলে ধরে বলেছেন, প্রতিশ্রুতি বড় বড় ছিল। কাজের কাজ হয়েছে কম।
২০১৪-র ২৬ মে প্রথম বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন মোদী। সেই হিসেবে শুক্রবারই তাঁর সরকার নয় বছর পূর্ণ করে দশম বছরে পা দিয়েছে। ২০১৯-এর ৩০ মে দ্বিতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন মোদী। এই উপলক্ষে মোদী সরকার তথা বিজেপি নয় বছরের সাফল্য নিয়ে ব্যাপক প্রচারে নামছে। এই নয় বছরের রাজত্বকে ‘সেবা, সুশাসন ও গরিব কল্যাণ’-এর সময়কাল হিসেবে তুলে ধরে প্রচার করছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী-সহ বিজেপি নেতারা দেশ জুড়ে জনসভা করবেন। শনিবার দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে অমিত শাহ এ নিয়ে তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রক আয়োজিত সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন।
কংগ্রেসও শনি-রবিবার দেশ জুড়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে মোদী সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরবে। তার আগে ‘নয় বছর, নয় প্রশ্ন’ শীর্ষক পুস্তিকা প্রকাশ করে কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘আমরা চাই প্রধানমন্ত্রী এই সব প্রশ্নের জবাবে মুখ খুলুন। রাহুল গান্ধী ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র সময় এই সব প্রশ্ন তুলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী কোনও উত্তর দিতে পারেননি।’’ অর্থনীতির দুরবস্থা থেকে আদানি-কেলেঙ্কারি, সামাজিক অনৈক্য থেকে কোভিডের সময় অব্যবস্থাপনা নিয়ে ন’টি প্রশ্ন ছুড়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর আজ ক্ষমাপ্রার্থনা দিবস পালন করা উচিত।’’
উল্টো দিকে বিজেপি আবার ‘নয় বছর, নয় সাফল্য’ স্লোগান তুলে ওই সব ক্ষেত্রেই মোদী সরকারের ‘সাফল্য’ তুলে ধরেছে। বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদের বক্তব্য, ইউপিএ-সরকারের দশ বছরের সঙ্গে তুলনা করলে কংগ্রেসের এ সব প্রশ্ন করা সাজে না। কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতের কটাক্ষ, ‘‘মোদী বলেছিলেন, বছরে ২ কোটি চাকরি হবে। এত দিনে ১৮ কোটি চাকরি হওয়ার কথা। তার বদলে প্রধানমন্ত্রী এখন নিজেই ডাক-পিয়নের মতো সরকারি চাকরির চিঠি বিলি করছেন। তা-ও মাত্র ৭১ হাজার!’’