ফাইল ছবি
অবশেষে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব বিভিন্ন দলের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে শুরু করলেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী জোটের প্রার্থী দেওয়া হলেও হার নিশ্চিত বুঝে এত দিন কংগ্রেস নেতৃত্ব এ নিয়ে উদ্যোগী হতে উৎসাহিত ছিলেন না। অথচ আর এক মাসের মধ্যেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। বিজেপিকে একেবারে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেওয়া যায় না বুঝে এ বার বিজেপি-বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করেছেন কংগ্রেসের নেতারা।
সূত্রের খবর, কংগ্রেসের বাইরের কোনও নেতাকে প্রার্থী করার বিষয়ে ঐকমত্য হলে সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীরা তাতেই রাজি হয়ে যাবেন। না হলে দলেরই কোনও প্রবীণ নেতাকে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী করার প্রস্তাব দেওয়া হবে। তৃণমূল কংগ্রেস আগেই কংগ্রেসের বাইরের কাউকে প্রার্থী করার পক্ষে মত দিয়েছে। কংগ্রেস এই মুহূর্তে এ বিষয়ে নরম অবস্থান নিচ্ছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, যদি সকলের গ্রহণযোগ্য কোনও ব্যক্তি প্রার্থী হতে রাজি হন, কংগ্রেসও তাঁকে মেনে নেবে।
আগামী ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতির নির্বাচন হয়ে যাবে। অনেক আগে থেকেই শিবসেনা শরদ পওয়ারের নাম প্রস্তাব করে রেখেছে। তৃণমূলেরও শরদ পওয়ারের নামে আপত্তি নেই। প্রশ্ন হল, শরদ পওয়ার নিজে রাজি হবেন কি না? কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন, পওয়ার নিজের জয় সম্পর্কে নিশ্চিত না হলে প্রার্থী হতে রাজি হবেন না। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে লোকসভা, রাজ্যসভার সাংসদ, সমস্ত রাজ্যের বিধায়কেরা ভোট দেন। লোকসভা, রাজ্যসভার সাংসদ সংখ্যা এবং উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, মণিপুরে বিজেপি ফের জিতে আসার পরে যে সমীকরণ দাঁড়িয়েছে, তাতে কংগ্রেস হাইকমান্ড মনে করছে, কোনও ভাবেই কংগ্রেস বা বিরোধী জোটের প্রার্থীর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জেতা মুশকিল। একমাত্র বিজু জনতা দল, ওয়াইএসআর কংগ্রেস, তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির মতো দলগুলিও কংগ্রেস-সহ বিরোধী জোটের পাশে দাঁড়ালে লড়াই হতে পারে।
গত এক সপ্তাহের মধ্যে বিজু জনতা দলের নেতা, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক, ওয়াইএসআর কংগ্রেসের প্রধান তথা অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডি দিল্লিতে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে গিয়েছেন। যা দেখে কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, এই দুই দলই বিজেপির প্রার্থীকে সমর্থন করবে। যদিও কোনও কোনও আঞ্চলিক দলের নেতানেত্রীর ধারণা, পওয়ার মাঠে নামলে খেলা ঘুরে যেতে পারে।
পওয়ার বা এমন কোনও ব্যক্তিত্ব রাজি না হলে, কংগ্রেস হাইকমান্ড দলের কোনও প্রবীণ নেতার নাম প্রস্তাব করবেন। কংগ্রেস সূত্রের খবর, এ ক্ষেত্রে বিক্ষুব্ধ নেতাদের জি-২৩ গোষ্ঠীর কোনও নেতার নাম ভাবা হতে পারে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হলেও তিনি হারবেন জেনেই তাঁর নাম প্রস্তাব করা হবে। এআইসিসি-র এক নেতার মন্তব্য, ‘‘সে ক্ষেত্রে সাপও মরবে, লাঠিও ভাঙবে না।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।