কে চন্দ্রশেখর রাও। —ফাইল চিত্র।
তেলঙ্গানার বিধানসভা নির্বাচন এবং তার পরে লোকসভা নির্বাচনেও কে চন্দ্রশেখর রাও (কেসিআর)-এর বিআরএস বা ভারত রাষ্ট্র সমিতির সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা খারিজ করে দিল কংগ্রেস। তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর অবশ্য আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনে বিরোধীদের সঙ্গেই থাকবেন বলে ঘরোয়া স্তরে নিয়মিত বার্তা দিচ্ছেন। তাঁর শিবির থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে জানানো হয়েছে, নভেম্বরে তেলঙ্গানার বিধানসভার ভোট। সেই ভোটে কংগ্রেসই তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী। তাই এখন কংগ্রেসের সঙ্গে এক টেবিলে বসা অসম্ভব।
উল্টো দিকে কংগ্রেসও এ নিয়ে কোনও সংশয় রাখতে চাইছে না। তাই আজ মল্লিকার্জুন খড়্গে ও রাহুল গান্ধী তেলঙ্গানার কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে তাঁদের এককাট্টা হয়ে বিআরএসের বিরুদ্ধে মাঠে নেমে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কংগ্রেস হাই কমান্ডের মতে, কর্নাটকের পরে তেলঙ্গানা জিততে পারলে জাতীয় রাজনীতিতেও কংগ্রেসের দর কষাকষির ক্ষমতা বাড়বে। হেরে যাওয়া বিআরএস তার পরে জাতীয় স্তরে বিরোধী জোটে এলেও কংগ্রেসের সমস্যা থাকবে না। তেলঙ্গানায় কংগ্রেসের প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান মধু গৌড় যক্ষী বলেন, ‘‘খড়্গেজি ও রাহুলজি আমাদের বলে দিয়েছেন, বিআরএসের সঙ্গে জোট হবে না। জাতীয় স্তরেও বিরোধী জোটে বিআরএস থাকবে না। কারণ বিআরএস ও বিজেপি একসঙ্গেকাজ করছে।’’
রাজ্য রাজনীতির স্বার্থে এ কথা বললেও দুই দলই তেলঙ্গানার বিধানসভা নির্বাচনের পরে রণনীতি বদলের সম্ভাবনা খোলা রাখছে। পটনায় ১৫টি বিজেপি-বিরোধী দলের বৈঠকে বিআরএস-কে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। জুলাই মাসে শিমলার বৈঠকেও বিআরএস থাকবেনা। কিন্তু কেসিআর তৃণমূল ও জেডিইউ নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। মণিপুরে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল পাঠানোর ব্যাপারে কংগ্রেস বা তৃণমূল-সহ বিরোধীদের দাবির সঙ্গে কেসিআর যে একমত, সে কথাও তাঁর দলের পক্ষ থেকে তৃণমূল নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে।
ভবিষ্যতে কেসিআর যা-ই করুন, কংগ্রেস এখনও তাঁকে নিয়ে সংশয়ে। গত কাল ৬০০ গাড়ির কনভয় নিয়ে মহারাষ্ট্রের সোলাপুরে গিয়েছিলেন কেসিআর। লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে তেলঙ্গানা থেকে মহারাষ্ট্রের ওই এলাকায় আসা বস্ত্রশিল্পীদের বার্তা দিতেই তাঁর এই সফর। আজও তিনি সেখানে প্রচার করেছেন। কংগ্রেস ও উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনার অভিযোগ, কেসিআর আসলে মহারাষ্ট্রে বিজেপি-র বি-টিম হিসেবে বিরোধী জোটের ভোটে ভাঙন ধরাতে চাইছেন। কেসিআর যুক্তি দিয়েছেন, তিনি কংগ্রেসের এ-টিম নন। বিজেপির বি-টিমও নন।
রাহুল এ দিন তেলঙ্গানার নেতাদের বলেছেন, কর্নাটকের মতো তাঁদেরও মতভেদ ভুলে এককাট্টা হয়ে লড়তে হবে। সনিয়া গান্ধী তেলঙ্গানা গঠনে প্রধান ভূমিকা নিয়েছিলেন। রাজ্যের মানুষ কেসিআর সরকারের দুর্নীতি ও প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থতা নিয়ে ক্ষুব্ধ। তার ফায়দা তুলতে হবে। কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদককে সি বেণুগোপাল বলেন, ‘‘কেসিআরের সামন্ততান্ত্রিক সরকার এবং বিআরএস-বিজেপির অশুভ আঁতাঁতকে হারাতে তেলঙ্গানারমানুষ তৈরি।’’