তিরঙ্গা যাত্রা শেষে মোদী সরকারকে তীব্র আক্রমণে বিরোধী নেতৃত্ব। ছবি— পিটিআই।
সংসদের বাজেট অধিবেশনের শেষ দিন বিরোধীদের ‘তিরঙ্গা যাত্রা’র পর কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন কংগ্রেস সভাপতি। রাজধানী দিল্লির কন্সস্টিটিউশন ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকে মল্লিকার্জুন খড়্গের অভিযোগ, সংসদ অচল করে রাখার জন্য একমাত্র দায়ী মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার।
খড়্গে বলেন, ‘‘আপনারা সবাই দেখলেন, ৫০ লক্ষ কোটি টাকার বাজেট পাশ করিয়ে নেওয়া হল মাত্র ১২ মিনিটের মধ্যে। ওরা (বিজেপি) বার বার অভিযোগ করে, সংসদ চালাতে বিরোধীদেরই কোনও উৎসাহ নেই। তা হলে ১২ মিনিটে বাজেট পাশ হয় কী করে? তার পরেই তিনি বলেন, ‘‘শাসকদলই সমস্যা তৈরি করছে। যখনই আমরা কোনও দাবি উত্থাপন করি, আমাদের কথা বলতে দেওয়া হয় না। আমার ৫২ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এমন ঘটনা আগে কখনও দেখিনি। আসলে, সরকারের উদ্দেশ্যই ছিল, বাজেট অধিবেশনে যেন বিরোধীরা একটি কথাও বলতে না পারেন। সেই ব্যবস্থাই করা হয়েছে।’’
সম্মিলিত বিরোধীদের ‘তিরঙ্গা যাত্রা’ ছিল বৃহস্পতিবার। সংসদ ভবন থেকে হাঁটতে হাঁটতে বিরোধী নেতারা পৌঁছন বিজয় চকে। তার পর কনস্টিটিউশন ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করেন তাঁরা। সেখানেই মোদী সরকারকে চাঁছাছোলা ভাষায় নিশানা করেন কংগ্রেস সভাপতি। তাঁর অভিযোগ, মোদী সরকার মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে বটে, কিন্তু নিজেরাই তা মানে না। খড়্গের দাবি, বিরোধীরাই গণতন্ত্র এবং সংবিধানকে আগলে রেখে যাচ্ছে।
খড়্গের অভিযোগ, এ রকমই চলতে থাকলে গণতন্ত্রের মৃত্যু অবধারিত। তিনি বলেন, ‘‘এর পর আমরা একনায়কতন্ত্রের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাব।’’ তিনি জানান, ১৮ থেকে ১৯টি বিরোধী রাজনৈতিক দল আদানিকাণ্ডে জেপিসি চেয়ে আবেদন করেছে। আদানির সম্পত্তি দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যে কী করে ১২ লক্ষ কোটি বৃদ্ধি পেল তা দেশের মানুষকে জানানো প্রয়োজন বলে মনে করে না বিজেপি। তাঁর কথায়, ‘‘কিছু তো একটা গোলমাল আছেই। তাই মোদী সরকারের জেপিসির দাবিতে এত আপত্তি!’’
এর পরেই প্রধানমন্ত্রী মোদীর দিকে কটাক্ষ ছুড়ে দেন কংগ্রেস সভাপতি। বলেন, ‘‘পুরনো ট্রেনে নতুন ইঞ্জিন লাগানো ছাড়া ওদের (মোদী সরকার) আর কোনও কাজ নেই। নয়া ইঞ্জিন লাগিয়ে লম্বা একটা ভাষণ, ব্যস, কাজ শেষ। ট্রেন উদ্বোধনে আপনার যাওয়ার কী প্রয়োজন সেটাই এখনও বুঝতে পারলাম না। আপনার তো এই কাজটি স্থানীয় সাংসদদের দিয়ে করানো উচিত ছিল।’’
বৃহস্পতিবারের ‘তিরঙ্গা যাত্রা’য় কংগ্রেসের পাশাপাশি হাজির ছিল ডিএমকে, সমাজবাদী পার্টি, আরজেডি, এনসিপি এবং বামপন্থীরা। সংসদ ভবন চত্বর থেকে জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে মিছিল করে তাঁরা পৌঁছন বিজয় চকে।