ফাইল চিত্র।
বাংলায় দ্বিতীয় দফা ভোটের আগে বুধবার জাতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধী দলগুলিকে জোট বেঁধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সর্ব ভারতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হল, রাহুল গাঁধী তথা কংগ্রেস নেতৃত্ব বহু দিন ধরেই এই বিরোধী ঐক্যের প্রয়োজনের কথা বলে আসছে। তবে মমতার চিঠির প্রস্তাব সম্পর্কে সনিয়া গাঁধীই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে কংগ্রেসের দাবি।
কংগ্রেস-সহ যে ১৫টি দলকে মমতা চিঠি লিখেছিলেন, তাদের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে কাশ্মীরের পিডিপি নেতৃত্ব। শিবসেনার তরফ থেকে চিঠির উল্লেখ করে বলা হয়েছে, তারা ভাবনা-চিন্তা করবে।
পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস বাম ও আইএসএফের সঙ্গে জোট বেঁধে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ছে। তারই মধ্যে মমতা অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে কংগ্রেস সভানেত্রীকেও চিঠি লিখে বিরোধী জোটের আহ্বান জানান। কিন্তু তা বলে অধীর চৌধুরী, আব্দুল মান্নানের মতো প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা সুর নরম করেননি। এআইসিসি-র মঞ্চ থেকে মুখপাত্র রাজীব শুক্ল বলেন, ‘‘কংগ্রেস সংবিধান রক্ষায়, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান রক্ষায় বিরোধী ঐক্যের কথা বলছে। রাহুল গাঁধী অনেক দিন ধরেই এ কথা
বলছেন। মমতা কংগ্রেস সভানেত্রীকে চিঠি লিখেছেন। তিনিই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’’
কংগ্রেস সূত্রের ইঙ্গিত, বিরোধী জোট হলে তার রাশ কার হাতে থাকবে, তা ঠিক করা দরকার। মমতাই এ বিষয়ে প্রথম উদ্যোগী হলেন, এমন বার্তা যাওয়া কংগ্রেস চায় না। কংগ্রেস নেতারা মনে করাচ্ছেন, সনিয়া নিজে মমতা, হেমন্ত সোরেন, উদ্ধব ঠাকরের মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন। দ্বিতীয় দফার ভোটের আগের দিন ওই চিঠিকে চাপের মুখে মমতার আকুতি বলেও মনে করছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা।
পিডিপি সভাপতি মেহবুবা মুফতি অবশ্য মমতার চিঠি টুইটে তুলে জানিয়েছেন, “আমি ওনার সঙ্গে একমত। দেশের গণতন্ত্র সুরক্ষিত রাখতে এবং মূল্যবোধ অটুট রাখতে বিরোধীদের একজোট হওয়া জরুরি।” মমতার প্রতি তাঁর বক্তব্য, “আহ্বান জানানোর জন্য ধন্যবাদ। সংবিধান নির্দেশিত যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ধ্বংস করতে চাইছে কেন্দ্র। আপনার আশঙ্কা বুঝি এবং তা ভাগ করে নিতে চাই।”
যে ভাবে সংসদে সংখ্যার জোরে ‘গুঁতিয়ে’ কৃষি আইন পাশ করানো হয়েছে, তা উল্লেখ করেছেন কাশ্মীরের নেত্রী। কেন্দ্রীয় সংস্থা যে ভাবে উপত্যকার নেতা-নেত্রীদের আটক করেছে, তার উল্লেখ করে মুফতির বক্তব্য, “কেন্দ্রের অত্যাচারের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার সময় এসেছে।”
মমতার আহ্বানে আজ সাড়া দিয়েছে শিবসেনাও। প্রাথমিক ভাবে তারা জানিয়েছিল, উত্তরবঙ্গের কিছু আসনে প্রার্থী দিতে চায়। পরে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিজেপিকে হটাতে তৃণমূলের পাশেই রয়েছে। আজ শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত জানান, “অসম ও পশ্চিমবঙ্গের ফল অদূর ভবিষ্যতে জাতীয় রাজনীতির দিক নির্ধারণ করবে।” তাঁর কথায়, “আগেও গণতন্ত্র আক্রান্ত হয়েছে। এই প্রথম নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের কথা লিখেছেন। এ ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করব।”