প্রতীকী ছবি।
দিল্লির আমলাতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্স বা অধ্যাদেশ আসন্ন বাদল অধিবেশনে আনার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। অন্য দিকে ওই অধ্যাদেশ যাতে রাজ্যসভায় রোখা সম্ভব হয়, তার জন্য কোমর বেঁধে বিরোধী জোট গঠনে তৎপর হয়েছে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের দল আম আদমি পার্টি। কিন্তু সংশয় রয়েছে কংগ্রেসের অবস্থান নিয়ে। দিল্লি কংগ্রেস নেতৃত্ব কোনও ভাবেই কেজরীর পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত নন। তবে গ্রীষ্মাবকাশের পরে সুপ্রিম কোর্ট খুললে ওই অধ্যাদেশ সুপ্রিম কোর্টই খারিজ করে দেবে বলে আশা করছেন কংগ্রেস নেতারা। তা হলে কেজরীর পাশে দাঁড়ানোর বাধ্যবাধকতা আর থাকবে না দলের।
দিল্লিতে আমলাতন্ত্রের উপর নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে কেজরীওয়াল এবং দিল্লি সরকারের বিবাদ সুপ্রিম কোর্টে গড়িয়েছিল। দেশের শীর্ষ আদালত কেজরীওয়ালের পক্ষে রায় দিলেও পরবর্তী সময়ে মোদী সরকার অধ্যাদেশ জারি করে ফের ওই ক্ষমতা নিজের হাতে নিয়ে নেয়। কেন্দ্রের ওই পদক্ষেপের বিরুদ্ধেই বিরোধীদের একজোট করতে মাঠে নেমেছেন কেজরীওয়াল। সরকার যে ওই অধ্যাদেশকে আইনি বৈধতা দিতে আসন্ন সংসদ অধিবেশনে বিল নিয়ে আসবে, তা বিলক্ষণ জানেন কেজরী। সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে লোকসভায় কোনও ভাবেই ওই বিল পাশ রোখা সম্ভব নয় বিরোধীদের পক্ষে। কিন্তু রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার ম্যাজিক-সংখ্যা ছোঁয়ার প্রশ্নে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে বিজেপি। তাই কেজরী রাজ্যসভায় বিরোধীদের একজোট করে সরকারকে কড়া পরীক্ষার মুখে ফেলার পক্ষপাতী।
কিন্তু কংগ্রেসের সাহায্য ছাড়া বিজেপিকে যে রাজ্যসভায় আটকে দেওয়া সম্ভব নয়, তা ভাল ভাবেই বুঝতে পারছে সব শিবির। দিল্লির কংগ্রেস নেতৃত্ব কেজরীকে সমর্থনের ঘোরতর বিরোধী। আবার অন্য দিকে বিজেপি-বিরোধী জোটে শামিল না হলে কংগ্রেসের অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। সেটাও অস্বীকার করতে পারছেন না কংগ্রেস নেতৃত্ব। তবে বাদল অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে একটি বিকল্প রাস্তা বেরিয়ে আসতে পারে বলে আশা করছেন অনেক কংগ্রেস নেতাই। তাঁদের ব্যাখ্যা, গ্রীষ্মকালীন ছুটির পরে শীর্ষ আদালত খুললেই ওই অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে আবেদন জানাবে দিল্লি সরকার তথা আপ নেতৃত্ব। কংগ্রেসের আশা, সুপ্রিম কোর্টই তাদের রায়ের বিরুদ্ধে আনা ওই অধ্যাদেশ খারিজ করে দেবে। তা হলে বিষয়টি সংসদ পর্যন্ত গড়াবে না। ফলে কেজরীওয়ালের দলকে সমর্থন করার মতো পরিস্থিতি এড়াতে সমস্যা হবে না দলের।