অশোক গহলৌত এবং সচিন পাইলটের দ্বন্দ্বের জেরে রাজস্থান কংগ্রেসে ভাঙনের আশঙ্কা। ফাইল চিত্র।
পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ এ বার রাজস্থান পাবলিক সার্ভিস কমিশনের উপর নিষেধাজ্ঞা বলবতের দাবি তুললেন কংগ্রেস নেতা সচিন পাইলট। সোমবার রাজস্থানের রাজধানী জয়পুরে ৫ দিনের জন সংঘর্ষ যাত্রার শেষে সচিন বলেন, ‘‘রাজস্থান পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রশ্ন ফাঁস হওয়ায় লক্ষ লক্ষ চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যতের ক্ষতি হয়েছে। তাই অবিলম্বে গোটা কমিশনকে বরখাস্ত করে পুনর্গঠন করা উচিত।’’
গত কয়েক মাস ধরেই গহলৌত সরকারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে সরব সে রাজ্যের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সচিন। কংগ্রেস হাইকমান্ডের ‘বার্তা’ উপেক্ষা করেই গত ১১ মে অজমের থেকে ‘জন সংঘর্ষ যাত্রা’ শুরু করেছিলেন সচিন। সোমবার জয়পুরে আনুষ্ঠানিক ভাবে সেই কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন তিনি।
শুধু রাজস্থান পাবলিক সার্ভিস কমিশনের অনিয়ম নয়, মরুরাজ্যের পূর্বতন বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘নিরপেক্ষ তদন্ত’ও ছিল সচিনের ‘জন সংঘর্ষ যাত্রা’র অন্যতম দাবি। সোমবার এ বিষয়ে গহলৈত সরকারকে ১৫ দিনের চূড়ান্ত সময়সীমা দিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত, গত এপ্রিলে এই দাবিতে জয়পুরের ‘শহিদ সম্পর্কস্থলে’ প্রতীকী অনশনও করেছিলেন তিনি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সাম্প্রতিক কালে সচিনের কোনও কর্মসূচিতে কংগ্রেসের পতাকা দেখা যায়নি।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে গহলৌত সরকারের বিরুদ্ধে ‘অভ্যুত্থান’ চালাতে গিয়ে ‘ব্যর্থ’ হয়েছিলেন পাইলট। সে সময় রাজস্থানের তৎকালীন উপ মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তাঁর অনুগামী ১৯ জন বিধায়ককে নিয়ে দিল্লির কাছে একটি রিসর্টে গিয়ে উঠেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রত্যাশী পাইলটের এই পদক্ষেপে কংগ্রেসের অন্দরে আশঙ্কা তৈরি হয় যে, বিজেপির সহায়তায় তিনিও রাজস্থানে কংগ্রেস সরকার ফেলে দিতে পারেন। তবে কিছু দিন পরেই বিদ্রোহে ইতি টানেন রাজেশ পাইলটের পুত্র। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এবং উপ মুখ্যমন্ত্রীর পদ খোয়াতে হয়েছিল তাঁকে।
চলতি বছরের শেষেই রাজস্থানে বিধানসভা নির্বাচন। কিন্তু সেখানে কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটার ইঙ্গিত নেই। বরং মুখ্যমন্ত্রী গহলৌত এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী পাইলট ধারাবাহিক ভাবে পরস্পরকে নিশানা করে চলেছেন। এই পরিস্থিতিতে দলকে ঐক্যবদ্ধ করা রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খড়্গেদের ‘বড় চ্যালেঞ্জ’ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।