রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রে আবার মোদী সরকার, কিন্তু তা পঙ্গু হয়ে গিয়েছে— আজ এমনটাই দাবি করলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। কিন্তু একই সঙ্গে তাঁর বার্তা, কংগ্রেস এখনই সরকার ফেলার চেষ্টা করবে না, বরং বিরোধীর ভূমিকাই পালন করবে।
কেরলের ওয়েনাড়ে লোকসভা আসনে বড় ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন রাহুল। আজ তিনি সেখানকার মানুষকে ধন্যবাদ জানাতে গিয়েছিলেন। জনসভায় রাহুল বলেন, “দিল্লিতে যে সরকার তৈরি হয়েছে, তা পঙ্গু সরকার। বিরোধীরা বিজেপিকে জোর ধাক্কা দিয়েছে।” তাঁর মতে, এ বার নরেন্দ্র মোদীকে তাঁর মনোভাব বদলাতে হবে। ওয়েনাড়ের জয়ী প্রার্থীর কথায়, “দেশের মানুষ তাঁকে (নরেন্দ্র মোদী) স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। মানুষ জানিয়ে দিয়েছেন, বিজেপি যেন সংবিধানে হাত না দেয়। সেই কারণেই নরেন্দ্র মোদী এখন সংবিধান তুলে নিজের মাথায় ঠুকছেন।” বিরোধীদের একাংশ যত দ্রুত সম্ভব সরকার ফেলার চেষ্টা করা উচিত বলে মনে করলেও কংগ্রেসের অবস্থান হল, সঠিক সময়ে সঠিক সুযোগের জন্য অপেক্ষা করা। সেই অবস্থান বুঝিয়ে রাহুল বলেন, “আমাদের দিক থেকে বিরোধীর ভূমিকায় আমাদের কাজ চলবে।”
বারাণসীতে মোদীর জয় নিয়ে তির্যক মন্তব্যও করতে ছাড়েননি কংগ্রেসের এই প্রাক্তন সভাপতি। তিনি বলেন, মোদী কোনও রকমে বারাণসীতে জিতেছেন। নির্বাচন কমিশন মোদীর পছন্দ মতো ভোটের দিনক্ষণ ঠিক করেছিল। একেবারে শেষে বারাণসীর নির্বাচন রাখা হয়েছিল। তিনি আদর্শ আচরণবিধি ভেঙে ভোটগ্রহণের দিন কন্যাকুমারীতে ধ্যানে বসেছিলেন। টিভিতে তার প্রচার হয়েছে। তার পরেও কোনও মতে বারাণসীতে জিতেছেন। অযোধ্যায় মানুষও বিজেপিকে হারিয়ে বার্তা দিয়েছেন, তাঁরা বিদ্বেষ, হিংসার রাজনীতি পছন্দ করেন না।”
২৪ জুন থেকে নতুন লোকসভার প্রথম অধিবেশন শুরু হচ্ছে। সরকারি সূত্রের খবর, রাষ্ট্রপতি এনডিএ সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সন্তুষ্ট। ফলে এই অধিবেশনে মোদী সরকারকে আস্থাভোটে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে না। তবে বিরোধীরা যদি স্পিকার পদের ভোটে নিজেদের প্রার্থী দেয়, তা হলে সেই সময়েই ভোটাভুটিতে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণিত হয়ে যাবে।
মোদী সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও রাহুল বলেছেন, বাস্তবে কেন্দ্রের সরকার এখন এতটাই পঙ্গু যে সোজা হয়ে হাঁটার ক্ষমতা নেই। ভোটের আগের মোদীর থেকে এখনকার মোদী পুরোপুরি আলাদা। কংগ্রেসের যুক্তি, আগে মোদী এনডিএ-র শরিক দলের নেতাদের তাচ্ছিল্য করতেন। এখন তিনি নীতীশ কুমারকে দেখলে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াচ্ছেন। চন্দ্রবাবুকে টেনে নিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরছেন।