ব্যপমে কংগ্রেস যাবে আদালতে

বিরোধী দলে থাকার সময়ে ঠিক একই অভিযোগে তুলত বিজেপি। সিবিআইকে তারা বলত, ‘কোরাপশন ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:১৯
Share:

ফাইল চিত্র।

রহস্যজনক মৃত্যু প্রায় ৫০ জনের। দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে মুখ্যমন্ত্রী থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদেরও। তবু মধ্যপ্রদেশের ব্যবসায়িক পরীক্ষা মণ্ডল (ব্যপম)-এর পরীক্ষা কেলেঙ্কারি নিয়ে চার্জশিটে সিবিআই ‘ক্লিনচিট’ দিয়েছে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানকে। এর প্রতিক্রিয়ায় কংগ্রেস আজ একপেশে তদন্তের জন্য সরাসরি দায়ী করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। শুধু তা-ই নয়, এ নিয়ে আইনি লড়াইয়ে নামার কথাও ঘোষণা করেছে তারা। এই প্রথম সিবিআই তদন্তকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে চলেছে কংগ্রেস।

Advertisement

মধ্যপ্রদেশের ব্যপম কেলেঙ্কারি দেশের বড় দুর্নীতিগুলির অন্যতম। রাজ্যের মেডিক্যাল ও অন্যান্য সরকারি পরীক্ষায় ঢালাও দুর্নীতির ওই চক্রের কথা ফাঁস হলে গোটা দেশে তা শোরগোল ফেলে দিয়েছিল বছর পাঁচেক আগে। এই দুর্নীতিতে জড়িত ও তদন্তের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তিদের একের পর এক মৃত্যু রহস্য বাড়িয়ে তোলে আরও। কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহ এবং এক ‘হুইসেল ব্লোয়ারের’ হাতে অকাট্য প্রমাণ ছিল যে, এই দুর্নীতিতে মুখ্যমন্ত্রীর নাম জড়ানোয় বাজেয়াপ্ত করা হার্ড ডিস্ক থেকে ৪৮ বার বাদ দেওয়া হয়েছে তাঁর নাম। শেষ পর্যন্ত সিবিআইয়ের চার্জশিটে ‘ক্লিনচিট’ পেয়ে শিবরাজের দাবি, ‘‘আমি ‘ক্লিন’ ছিলাম, ‘চিট’ তো পাওয়ারই ছিল। সত্য সামনে আসারই ছিল।’’

বিরোধীদের অভিযোগ, বীরভদ্র সিংহ, অমরেন্দ্র সিংহ, অশোক গহলৌত, ভুপেন্দ্রসিংহ হুডা, অশোক চহ্বাণ, কার্তি চিদম্বরম, লালু প্রসাদ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়— সিবিআই বেছে বেছে বিরোধী শিবিরের লোকজনকেই দোষী সাব্যস্ত করছে। আর ছাড় পাচ্ছেন বিজেপি নেতারা। রাহুল গাঁধী টুইটে ব্যঙ্গ করে বলেন, ‘‘নৈতিকতা গেল আস্তাকুঁড়ে, জয় স্বচ্ছ ভারত অভিযানের।’’

Advertisement

দিল্লিতে কপিল সিব্বল, কে টি এস তুলসীর মতো আইনজীবীরা আজ কংগ্রেসের সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষণা করেন, অকাট্য প্রমাণ অগ্রাহ্য করে সিবিআই ব্যপম কেলেঙ্কারিতে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে পুরোপরি ছাড় দিয়েছে। প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে এ বারে সিবিআইয়ের অফিসারদের বিরুদ্ধেই ‘ব্যক্তিগত’ মামলা করা হবে।

তুলসী বলেন, ‘‘আগে সিবিআই ছিল ‘খাঁচাবন্দি তোতা, এখন খাঁচার মধ্যেই তোতার গলা টিপে ধরা হচ্ছে।’’ একই অভিযোগ বাকি বিরোধী দলগুলিরও। এই বিষয়ে তাই বিরোধীদের একজোট করারও চেষ্টা করছে কংগ্রেস।

বিরোধী দলে থাকার সময়ে ঠিক একই অভিযোগে তুলত বিজেপি। সিবিআইকে তারা বলত, ‘কোরাপশন ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন’। আর কংগ্রেস আজ সিবিআইয়ের নাম দিল ‘কম্প্রোমাইজড ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন’। কংগ্রেসের বক্তব্য, এনআইএ-র প্রধান করা হচ্ছে গুজরাতের দাঙ্গায় যুক্ত ব্যক্তিকে, বিতর্কিত ব্যক্তিদের বসানো হচ্ছে সিবিআইয়ের শীর্ষ স্তরে, ফলে তদন্ত কেমন হবে, বোঝাই যাচ্ছে। সিব্বলের কথায়, ‘‘খোদ প্রধানমন্ত্রীর নাম রয়েছে সহারা ডায়েরিতে। কোনও তদন্ত হলো না। তদন্ত হচ্ছে না অমিত শাহের ছেলের বিরুদ্ধেও। ছাড় পাচ্ছেন ঘনিষ্ঠ শিল্পপতিরাও। কিন্তু সিবিআইয়ের কবলে পড়ছে শুধু বিরোধী নেতারা! ’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement