মার্চ-এপ্রিল মাসেই কর্নাটকে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। প্রতীকী ছবি।
লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিকে ধাক্কা দিতে যে কোনও মূল্যে কংগ্রেস নেতৃত্ব কর্নাটক জিততে চাইছে। কিন্তু কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা বলছে, সিদ্দারামাইয়া ও ডি কে শিবকুমারের নেতৃত্বে কংগ্রেস দৌড়ে এগিয়ে থাকলেও বিজেপি ঘাড়ের কাছেই নিঃশ্বাস ফেলবে। ফলে পাঁচ বছর আগের মতো ফের কর্নাটকে ত্রিশঙ্কু বিধানসভা হলে বিজেপি আবার জেডিএস-কে সঙ্গে নিয়ে বা কংগ্রেস-জেডিএসের বিধায়ক ভাঙিয়ে সরকার গড়ে ফেলতে পারে বলে কংগ্রেস নেতৃত্ব আশঙ্কায় রয়েছেন।
মার্চ-এপ্রিল মাসেই কর্নাটকে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। অর্থনৈতিক ভাবে এগিয়ে থাকা রাজ্য কর্নাটকে বিজেপিকে সরিয়ে ক্ষমতায় এলে লোকসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য আর্থিক পুঁজি জোগাড় করতে কংগ্রেসের সুবিধা হবে বলে দলের নেতারা মনে করছেন। কর্নাটকের নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে এখন কংগ্রেসের সভাপতি। ফলে তাঁর কাজেও কর্নাটকের ভোট সম্মানের লড়াই। কিন্তু সম্প্রতি কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ২২৪ আসনের বিধানসভায় কংগ্রেস ১০৮ থেকে ১১৪টি আসন জিততে পারে। যার অর্থ, কংগ্রেস কোনওমতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১১৩টি আসন জিতবে বা খুব কাছে এসে আটকে যাবে। তার থেকেও বড় চিন্তার কারণ, বিজেপি ৭৫টি আসন পেয়ে ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলবে। মল্লিকার্জুনের পুত্র প্রিয়াঙ্ক খড়্গে অবশ্য আনুষ্ঠানিক ভাবে দাবি করেছেন, কংগ্রেস ১৩০টি আসন জিতবে। কিন্তু কংগ্রেস সূত্রের খবর, এটা আসলে দলের কর্মীদের মনোবল ধরে রাখার চেষ্টা।
কংগ্রেসের সমীক্ষা অনুযায়ী, সংখ্যালঘু, অনগ্রসর ও দলিতরা কংগ্রেসকে সবথেকে বেশি ভোট দেবে। যা দেখে কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া ফের তাঁর ‘অহিন্দা’ ভোটব্যাঙ্কের (কন্নড় ভাষায় সংখ্যালঘু, অনগ্রসর ও দলিত) রাজনীতি শুরু করেছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডি কে শিবকুমার আবার কর্নাটকের প্রভাবশালী ভোক্কালিগা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। তিনি ভোক্কালিগাদের ভোট নিয়ে এসে নিজেকে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দৌড়ে এগিয়ে রাখতে চাইছেন। সমীক্ষা অনুযায়ী, ভোক্কালিগাদের অর্ধেক ভোট এইচ ডি দেবগৌড়া ও তাঁর পুত্র এইচ ডি কুমারস্বামীর দল জেডিএস পাবে। ৩৮ শতাংশ পাবে কংগ্রেস। বাকি ভোটের অধিকাংশ বিজেপি পাবে।
কংগ্রেস সূত্র বলছে, বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে বি এস ইয়েদুরাপ্পাকে সরিয়ে তাঁরই লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়ের নেতা বাসবরাজ বোম্মাইকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিল। কিন্তু তাতেও সরকার বিরোধী মনোভাব দূর করা যায়নি। উল্টে বোম্মাই সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ঘুষের অভিযোগ উঠেছে। তা থেকে নজর ঘোরাতে হিজাবের মতো বিতর্ক তৈরি করে বিজেপি উগ্র-হিন্দুত্বের রাজনীতি করতে চাইছে। ইয়েদুরাপ্পাকেও ফের সংগঠনের কাজে জড়াতে চাইছে। কংগ্রেসের আশঙ্কা, গোয়াতে তৃণমূল কংগ্রেস, গুজরাতে আম আদমি পার্টি যে ভাবে কংগ্রেসের ভোট কেটেছে, একই ভাবে কর্নাটকে কংগ্রেসের ভোট কাটার জন্য বিজেপি ভোটের আগে জেডিএস-কে মদত দিতে পারে।