রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
আগামী সপ্তাহে বেঙ্গালুরুতে বিরোধী শিবিরের বৈঠকের আগেই কংগ্রেস লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিল। আজ দিল্লিতে মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে ও রাহুল গান্ধী প্রায় চার ঘণ্টা বৈঠক করেছেন।
উত্তরপ্রদেশের পরেই মহারাষ্ট্র থেকে লোকসভা আসনের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। রাহুল গান্ধী মনে করছেন, তাঁর ভারত জোড়ো যাত্রায় মহারাষ্ট্রে যে ভাবে সাড়া মিলেছে, তাতে কংগ্রেস ফের বাকি দলকে পিছনে ফেলে সবচেয়ে বেশি আসন জিতে ‘হৃত গৌরব’ ফিরিয়ে আনতে পারে। কিন্তু বিজেপি শিবসেনা ও এনসিপি-তে ভাঙন ধরানোর ফলে মহারাষ্ট্রের মানুষের মনে উদ্ধব ঠাকরে ও শরদ পওয়ারের প্রতি সহানুভূতি তৈরি হয়েছে। তাই উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা ও শরদ পওয়ারের এনসিপি-র সঙ্গে জোট বজায় রেখেই মহারাষ্ট্রের ময়দানে নামা উচিত বলে মনে করছেন রাহুল। কিন্তু মহারাষ্ট্রে একই সঙ্গে কংগ্রেসের নিজস্ব শক্তিবৃদ্ধির দিকেও নজর দিতে রাজ্যের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন খড়্গে ও রাহুল। জাতীয় স্তরেও বিরোধী জোটে থাকার পাশাপাশি কংগ্রেস একই নীতি নিয়ে নিজস্ব শক্তি বাড়ানোর দিকে নজর দিতে চায়। কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের বিআরএস ও প্রকাশ অম্বেডকরের দল মহারাষ্ট্রে বিজেপি বিরোধী ভোটে ভাঙন ধরাতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে কংগ্রেসের। তা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, সনিয়া গান্ধী ১৭ ও ১৮ জুলাই বিরোধী দলের বৈঠকে যোগ দিতে বেঙ্গালুরুতে যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে কর্নাটকে কংগ্রেসের জয়ের পরে সনিয়া প্রথম কর্নাটকে যাবেন। বেঙ্গালুরুতে বিরোধীদের বৈঠকে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের যৌথ রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে আলোচনা হবে। দেশ জুড়ে একসঙ্গে মোদী- সরকার বিরোধী আন্দোলনের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হবে। সে জন্য একটি কমিটিও তৈরি হবে। রাজ্য স্তরে আসন সমঝোতা নিয়েও আলোচনা করবেন বিরোধী নেতারা। পটনার বৈঠকে ১৫টি দল যোগ দিয়েছিল। বেঙ্গালুরুর বৈঠকে ২৪টি দল যোগ দিতে পারে। পটনায় যে সব দল যোগ দিয়েছিল, তা ছাড়াও এমডিএমকে, কেডিএমকে, ভিসিকে, আরএসপি, ফরোয়ার্ড ব্লক, কেরল কংগ্রেস(মণি), কেরল কংগ্রেস (জোসেফ) ও ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন অব মুসলিম লিগ যোগ দেবে।
কংগ্রেস হাইকমান্ড ইতিমধ্যেই পাঁচটি ভোটমুখী রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দলের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল বলেন, মহারাষ্ট্রের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হল। সূত্রের খবর, অজিত পওয়ার বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানোর পরে তাঁর জায়গায় বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের বিধানসভায় দলনেতা নানা পাটোলেরই হওয়া উচিত। তবে অজিত পওয়ারের গোষ্ঠীর বিধায়কদের পদ খারিজ নিয়ে ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত এখনই তা নিয়ে সরব হবে না কংগ্রেস। খড়্গে দলের নেতাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভুলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রদেশ সভাপতি নানা পাটোলেকে নির্দেশ দিয়েছেন, অন্য নেতার এলাকায় গেলে তাঁকে জানিয়ে যেতে। প্রবীণ নেতাদের এক একটি লোকসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব দেওয়া হবে ঠিক হয়েছে।