ফাইল চিত্র।
ত্রিপুরায় বিজেপির হামলা-হুজ্জোতি ও বিপ্লব কুমার দেবের জমানায় ‘বিপর্যস্ত’ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে রাজ্যে সদস্য সংগ্রহ অভিযান স্থগিত করে দিল কংগ্রেস। বিজেপি ছেড়ে সম্প্রতি কংগ্রসে আসা প্রাক্তন বিধায়ক আশিস কুমার সাহা আজ সাংবাদিক বৈঠকে এই ঘোষণা করে বলেন, “রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি বিপর্যস্ত। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে বিরোধীদের উপরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে শাসক শিবির। অসহায় সরকারি আধিকারিকরাও। তাঁরা দায়িত্ব এড়াচ্ছেন। এই অবস্থায় আমরা আমাদের সমর্থকদের বিপদের মুখে ফেলে দিতে পারি না।” রাজ্যপালের ভুমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন আশিস। বিজেপির মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য দলত্যাগী আশিসদের পাল্টা আক্রমণ করে বলেন, “রাজ্যের মানুষের সঙ্গে এঁরা প্রতারণা করেছেন। এর পরিণাম তাঁরা দেখতে পাবেন।”
আগরতলায় কংগ্রেসের সদস্য সংগ্রহের অনুষ্ঠানে হামলার পরে বুধবার এআইসিসির ত্রিপুরা পর্যবেক্ষক অজয় কুমার রাজ্য পুলিশের প্রধানের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার পরে একটি স্মারকলিপি দেন ডিজিপিকে। ওই সাক্ষাতেই ডিজিপি ও আধিকারিকদের অসায়তার আভাস মিলেছে বলে ইঙ্গিত দিয়ে আশিসের অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকদের অপমান করা হচ্ছে। একব্যক্তির শাসনে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। শাসক বিজেপি যুবকদের দিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করেছে। বাড়িঘরে ঢুকে তারা আসবাবপত্রও লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। বিরোধী নেতাদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আশিসের মতে, মানুষ বিজেপির ভূমিকা বুঝতে পেরেছে বলেই তাদের সরকারের চার বছর পূর্তির দিনে শাসক দলের মিছিলে তেমন উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়নি।
অজয় কুমার জানান, আগামী দিনে কংগ্রেস কর্মীদের উপরে আক্রমণ হলে তাঁরা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হবেন। প্রদেশ কংগ্রেস ওই দিনের ঘটনায় নামধাম দিয়ে পুলিশের কাছে এজাহার করেছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পুলিশ এক জনকেও গ্রেফতার করেনি। তিনি বলেন, “বিজেপি রাজ্যে সন্ত্রাস করে দেশের কাছে ত্রিপুরাকে বদনাম করছে। ফাটল দেখা দিয়েছে তাদের সংগঠনে। ইতিমধ্যে দু’জন বিধায়ক কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। আরও কয়েক জন কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন। আগামী দিনে বিজেপির বিরাট সংখ্যক কর্মী-সমর্থক কংগ্রেসে যোগদান করবেন। সংগঠনকে বাঁচাতে মরিয়া হয়েই বিজেপি এই ধরনের আক্রমণ করাচ্ছে।” বিজেপির মুখপাত্র নবেন্দুর দাবি, “আর কেউ বিজেপি ছেড়ে যাবে না। কারণ, এমন বিকৃত মানসিকতার আর কেউ নেই দলে। ওই দিনের আক্রমণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সবাই চিনতে পেরেছে।”