প্রতীকী ছবি।
লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পরে বিজেপির প্রবল চাপের মুখে কর্নাটক ও মধ্যপ্রদেশে সরকার বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়ল কংগ্রেস।
দু’টি রাজ্যেই সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা সুতোয় ঝুলছে। বিজেপি দাবি করছে, কর্নাটকের অন্তত ২০ জন বিধায়ক সরকার ছাড়ার জন্য বসে রয়েছেন। কয়েক দিন আগে দলের দু’জন বিধায়ক প্রকাশ্যে রাজ্য বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণের সঙ্গে দেখাও করেছেন। এই পরিস্থিতিতে আজ এআইসিসির শীর্ষস্থানীয় গুলাম নবী আজাদ ও রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত নেতা কে সি বেণুগোপাল বেঙ্গালুরু পৌঁছন। বিধায়কদের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করেছেন তাঁরা। জোট সরকার বাঁচাতে মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে। কর্নাটকের বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস বিধায়ক রমেশ জারকিহোলি ইতিমধ্যেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, জোট সরকারের কাজে তিনি অসন্তুষ্ট। বেশ কয়েকজন বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে দল ছাড়তে পারেন। তাঁকে দলে রাখার জন্য কংগ্রেস শিবির থেকে মরিয়া চেষ্টা চলছে। কর্নাটকের ২২৪ সদস্যের বিধানসভায় বিজেপির বিধায়কের সংখ্যা ১১৫। কংগ্রেসের ৭৮ ও জেডিএসের ৩৭ জন বিধায়ক রয়েছেন। স্পিকার বাদে বিএসপির এক জন , নির্দল এক জন এবং কেপিজেপির এক জন বিধায়ক রয়েছেন। বিজেপির দাবি, কংগ্রেসের অন্তত ২০ জন বিধায়ক দল ছাড়ার জন্য প্রস্তুত। যা নিয়ে প্রবল চাপে এইচ ডি কুমারস্বামীর জোট সরকার। তবে বিজেপি সূত্রের খবর, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্য নেতৃত্বকে নির্দেশ দিয়েছে, নরেন্দ্র মোদীর শপথ গ্রহণ পর্যন্ত যেন সরকার ফেলার চেষ্টা না হয়। তেমন হলে ভুল বার্তা যাবে। বিজেপি নেতা ও রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা আজ বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটে কর্নাটকের ২৮টি আসনের মধ্যে ২৫টিতে জিতেছে বিজেপি। দেখা গিয়েছে, ২২৪টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ১৭৭টিতেই এগিয়ে রয়েছি আমরা। কুমারস্বামীর উচিত নতুন করে জনতার রায় নেওয়া।’’ জোট সরকার ফেলে বিজেপি কর্নাটকে সরকার গড়ার চেষ্টা করবে কি না, সে প্রশ্ন এড়িয়ে ইয়েদুরাপ্পার জবাব, ‘‘তেমন পরিস্থিতি তৈরি হলে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেবে দল।’’
হারের ধাক্কায় নড়বড়ে অবস্থা মধ্যপ্রদেশের কমল নাথ সরকারেরও। ছয় মাস আগে বিধানসভা ভোটে রাজ্যের ২৩০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছিল ১১৪টি আসন। বিএসপির দু’জন এবং সমাজবাদী পার্টির এক জন এবং চার জন নির্দল বিধায়কের সমর্থনে সরকার গড়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু কমল নাথকে আসন ছেড়ে দিতে ছিন্দাওয়াড়ার বিধায়ক দীপক সাক্সেনা ইস্তফা দেওয়ায় এই মুহূর্তে কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা ১১৩। লোকসভা ভোটে রাজ্যের ২৯টি আসনের মধ্যে ২৮টিই জিতে নিয়েছে বিজেপি। হারের পিছনে কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল কাজ করেছে বলেই অনেকে মনে করছেন। কংগ্রেসের এই সঙ্কটের মধ্যেই সরকার ফেলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিজেপি। কংগ্রেস সূত্রের খবর, সরকার বাঁচাতে এখন মন্ত্রিসভার কয়েক জন সদস্যকে মাঠে নামিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধায়কদের সামলে রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁদের। কোথায় কোথায় বিজেপি আঘাত হানতে পারে, সে দিকে নজর দেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে।