কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ। —ফাইল চিত্র।
মোদী সরকারের বিরুদ্ধে এ বার পরিবেশবিধি লঙ্ঘন করে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়ের ঘন জঙ্গলে আদানি গোষ্ঠীর হাতে কয়লা খনি তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। ‘দ্য রিপোর্টার্স কালেক্টিভ’ সংবাদমাধ্যমের তদন্ত রিপোর্টকে হাতিয়ার করে আজ কংগ্রেসের অভিযোগ, পরিবেশ মন্ত্রককে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কেন্দ্রের কয়লা মন্ত্রক আদানি গোষ্ঠীর কয়লা খননের বন্দোবস্ত করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর পরম মিত্র গৌতম আদানির জন্য এই নতুন খেলা খেলেছেন।
কী বলছে তদন্ত রিপোর্ট? ২০২১-এর নভেম্বরে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থারগুলির সংগঠন ‘দ্য অ্যাসোসিয়েশন অব পাওয়ার প্রোডিউসার্স’ কয়লা মন্ত্রককে চিঠি লিখে দু’টি কয়লা খনিকে নিলামে তোলার জন্য দরবার করে। ওই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য আদানি গোষ্ঠীর সুবিধার জন্যই এই দরবার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। কারণ যে দু’টি খনির জন্য দরবার করা হয়, তার মধ্যে একটি মধ্যপ্রদেশের সিঙ্গরৌলী অরণ্যে। তার কাছেই একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র আদানিরা অধিগ্রহণ করেছে। অন্যটি ছত্তীসগঢ়ের হাসদেও অরণ্ড জঙ্গলে। যার কাছে একটি খনি আগেই আদানি গোষ্ঠী হাতে পেয়েছে।
কিন্তু ২০১৮ থেকে পরিবেশ মন্ত্রক নিজেই এই দু’টি খনি-সহ মোট ১৫টি খনিকে কয়লা খনন থেকে বাদ রাখার সুপারিশ করেছিল। কয়লা মন্ত্রক তা সত্ত্বেও দু’টি খনি নিলামে তোলে। কী ভাবে জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে খনন সম্ভব, তার উপায় বাতলানোর জন্য কয়লা মন্ত্রকেরই অধীন সেন্ট্রাল মাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ডিজাইন ইনস্টিটিউটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু ওই সংস্থাও জানায়, ওখানে কয়লা খনন উচিত নয়। কয়লা মন্ত্রক সেটাও অগ্রাহ্য করে। নিলামে দু’টি খনিই আদানি গোষ্ঠীর কাছে যায়।
কংগ্রেসের বক্তব্য, এ থেকেই বোঝা যায় দেশের সম্পদ কী ভাবে আদানির হাতে সঁপে দেওয়া হচ্ছে। কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে বলেন, ‘‘মাত্র একজন ব্যক্তি, গৌতম আদানির ব্যবসায়িক স্বার্থের জন্য কী ভাবে নিয়ম বদলানো হচ্ছে, নীতি তৈরি হচ্ছে বোঝা যাচ্ছে।’’ নতুন এই অভিযোগ নিয়ে আদানি গোষ্ঠী কোনও বিবৃতি না দিলেও গত কালই সংস্থার তরফে বলা হয়েছিল, একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যম বেশি দাম দেখিয়ে কয়লা আমদানির পুরনো, ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে এনে আদানি গোষ্ঠীতে আর্থিক অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে।
কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘বেশি দাম দেখিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যন্ত্রাংশ আমদানি করা ও ভুয়ো সংস্থা তৈরি করে আদানি গোষ্ঠীর টাকা দেশে ফিরিয়ে আনায় গৌতম আদানির ভাই বিনোদ আদানির সহযোগী চাং চুং-লিং ও নাসের আলি শাবান আহলির যোগ রয়েছে। এ বার আদানিদের বেশি দাম দেখিয়ে কয়লা আমদানির তথ্য প্রকাশ্যে আসছে। প্রধানমন্ত্রী কী ভাবে তাঁর প্রিয় শিল্পপতিকে সাহায্য করছেন, তারও তদন্ত দরকার।’’