জয়রাম রমেশ। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এখনও অনুমোদনই করেনি। তার আগেই ছত্তীসগঢ়ে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে বিজেপির জনসভা থেকে আগামী পাঁচ বছর ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা’-য় বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশের পরে জনসভা থেকে এই ঘোষণাকে কংগ্রেস ভোটের আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন হিসেবেই দেখছে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই নির্বাচন কমিশনে এ বিষয়ে অভিযোগ জানানো হবে। রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলে আগেই এ বিষয়ে কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছেন।
গত শনিবার ছত্তীসগঢ়ে ভোট প্রচারে গিয়ে মোদী ঘোষণা করেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা’র মেয়াদ ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে। তবে তিনি আরও পাঁচ বছর দেশের ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সরকারি সূত্রের খবর, মোদী ঘোষণা করে দিলেও এই প্রকল্পে এখনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সিলমোহরই দেয়নি। পাঁচ বছর বিনামূল্যে রেশন দিতে প্রায় ১১ লক্ষ কোটি টাকা খরচ হবে। গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়নি। চলতি সপ্তাহেও মন্ত্রিসভার বৈঠক হবে না।
আজ কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘মরিয়া প্রধানমন্ত্রী ভোটের প্রচারে গিয়ে আরও পাঁচ বছর গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার কথা ঘোষণা করে আদর্শ আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেছেন। এখন তো দেখা যাচ্ছে মন্ত্রীরা এর অনুমোদনই দেননি। অবাক হওয়ার কিছু নেই। মোদী এ ভাবেই কাজ করেন। মন্ত্রিসভার কার্যত কোনও অস্তিত্ব নেই।’’
নির্বাচনের মধ্যেই মোদী সরকার নিজের সাফল্যের প্রচারে ‘বিকশিত ভারত সঙ্কল্প যাত্রা’ আয়োজন করেছিল। প্রচারের রথ বার করে আমালাদের রথ প্রভারী হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কংগ্রেসের অভিযোগে কমিশন ভোটমুখী রাজ্যে রথ বার করায় বাধা দিয়েছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মধ্যপ্রদেশে গিয়ে বিজেপির হয়ে কাজ করতে সরকারি আমলাদের ধমকেছিলেন। কমিশন সে ক্ষেত্রে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এখন ভোটের প্রচারে মোদীর পাঁচ বছরের রেশনের ঘোষণা নিয়ে কমিশন পদক্ষেপ করবে কি না, সেটাই প্রশ্ন।
কংগ্রেসের অভিযোগ, বিরোধী শাসিত রাজ্যে সরকারি ভর্তুকি, ভাতা ঘোষণা হলে মোদী এত দিন তাকে খয়রাতি, ‘রেউড়ি’ বা ‘গুড়ের মিষ্টি বিলি’ বলে কটাক্ষ করেছেন। এখন হারের ভয়ে নিজেই খয়রাতি শুরু করেছেন। দেশের ১৪০ কোটি মানুষের মধ্যে ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দিয়ে নিজেই মেনে নিচ্ছেন যে তাঁরা আর্থিক দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন।