—ফাইল চিত্র
পঞ্জাবে কৃষকদের আন্দোলন শুরুর পরে মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহর ছেলেকে ইডি-র তলব। দিল্লির সীমানায় সড়ক অবরোধ জোরদার হতে পঞ্জাবের মান্ডির এজেন্টদের বিরুদ্ধে আয়কর হানা। এ বার পশ্চিমবঙ্গে ভোটের হাওয়া শুরু হতেই ফের রাজীব কুমারকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চেয়ে সিবিআইয়ের সুপ্রিম কোর্টে আর্জি।
রাজনৈতিক স্বার্থে মোদী সরকারের সিবিআই-ইডি-আয়কর দফতরকে কাজে লাগানোর নমুনা হিসেবে কংগ্রেস তিনটি ঘটনাকে আজ একই বন্ধনীতে টেনে আনল। পঞ্জাবের কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহের বিরুদ্ধে ইডি-র পদক্ষেপের সঙ্গে মমতার প্রশাসনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের সক্রিয়তার তুলনা টানল কংগ্রেস। কংগ্রেসের পঞ্জাবের সাংসদ, লোকসভায় কংগ্রেসের সচেতক রভনীত সিংহ বিট্টু বলেন, ‘‘এই ভাবেই মোদী সরকার বিরোধীদের মনে আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা করে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যা হচ্ছে, যে ভাবে তিন আইপিএস অফিসারকে বদলি করা হয়েছে, সমস্ত বিরোধীদের সঙ্গেই তা-ই হচ্ছে। মায়াবতীর মতো বিরোধী নেত্রী হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন। কোথাও কারও ভাইয়ের বিরুদ্ধে, কোনও অন্য ভাবে সিবিআই-ইডি-কে কাজে লাগানো হচ্ছে।’’
ইডি শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউতের স্ত্রী বর্ষা রাউতকে জেরার জন্য আজ তলব করেছে। ইডি-র অভিযোগ, পিএমসি ব্যাঙ্ক কেলেঙ্কারিতে বর্ষার নাম উঠে এসেছে। তাই তাঁকে মঙ্গলবার ডেকে পাঠানো হয়েছে। শিবসেনা নেতাদের অভিযোগ, এফআইআর-এ বর্ষার নাম ছিল না। রাউত নিয়মিত কেন্দ্রের সমালোচনা করছেন, বিরোধীদের এককাট্টা হতে বলছেন বলেই ইডি-কে মাঠে নামানো হল। কিছু দিন আগে মহারাষ্ট্রে বিজেপি ছেড়ে এনসিপি-তে যোগ দেওয়া একনাথ খাড়সেকেও অন্য একটি মামলায় ইডি তলব করেছে।
আরও খবর: ভিন ধর্মে বিয়েতে বাধা, পুলিশের ভয়ে উত্তরপ্রদেশ ছাড়ল যুগলরা
আরও খবর: সোমবার ক্রিকেট মাঠে একই মঞ্চে থাকতে পারেন দাদা আর অমিত শাহ
কেন্দ্রের তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে পঞ্জাবে কৃষকদের আন্দোলন শুরু হওয়ার পরে, নভেম্বরে অমরেন্দ্র- পুত্র রণেন্দ্রকে ইডি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে। ১৩ বছর আগে বিদেশি মুদ্রা নয়ছয় আইনে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছিল।
রভনীত বলেন, ‘‘কেন্দ্র চাইছিল, অমরেন্দ্র সরকার কৃষকদের ধর্না ওঠাতে পুলিশ বাহিনী নামাক। তা না হওয়াতেই ইডি তৎপর হয়ে ওঠে। তা-ও মুখ্যমন্ত্রীর নাতির বাগদানের চার দিন আগে।’’
ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকায়েতকে রবিবার ফোনে হুমকি দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ খুনের হুমকির মামলা দায়ের করেছে। দিল্লি ঘিরে কৃষক আন্দোলন জোরদার হতে গত সপ্তাহে পঞ্জাবের মান্ডির এজেন্টদের বাড়ি-দফতরেও আয়কর হানা দেয়।
বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, সরকার আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা করছে। কারণ, এই এজেন্টরাও কৃষি আইনের বিরোধিতা করছে। উল্টো দিকে, বিজেপির অভিযোগ ছিল, এই এজেন্ট বা মধ্যস্বত্বভোগীরা নিজেদের স্বার্থে কৃষি সংস্কার হতে দিচ্ছে না। তাঁরা কৃষকদের আন্দোলনে উসকানি দিচ্ছে। পঞ্জাবে প্রায় ২৮ হাজার এজেন্ট রয়েছেন।
রভনীত বলেন, ‘‘পঞ্জাবে কোনও মধ্যস্বত্বভোগী নেই। কেউ সেখানে চাষিদের থেকে কম দামে ফসল কিনে বাজারে বেশি দামে বিক্রি করছে না। এই এজেন্টদের এফসিআই বা খাদ্য নিগম নিয়োগ করেছে। তাঁরা চাষিদের থেকে ফসল তুলে এফসিআই-এর গুদামে পৌঁছে দেন। সেই পরিষেবার বিনিময়ে কমিশন পান। এঁরা না থাকলে কৃষকরাই বিপদে পড়বেন।’’