বিজয়েন্দ্র। —ফাইল চিত্র।
কর্নাটক বিজেপির রাজ্য সভাপতি পদে লিঙ্গায়েত নেতা বি এস ইয়েদুরাপ্পার ছেলে বিজয়েন্দ্রকে বসিয়েও ঘরোয়া কোন্দলের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না বিজেপি। বিভিন্ন সূত্রে ইঙ্গিত, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্তে কর্নাটকের একাধিক বর্ষীয়ান নেতা, বিশেষত দলিতেরা ক্ষুব্ধ। কর্নাটকের বিজেপি সাংসদ রমেশ জগাজিনাগি এ নিয়ে সরাসরি নিজের দলকেই আক্রমণ করে বলেছেন, ‘‘আপনি দলিত হলে বিজেপিতে আপনার উত্তরণের কোনও সম্ভাবনা নেই।’’
আগামী ১৫ নভেম্বর রাজ্য সভাপতি পদে দায়িত্ব গ্রহণ করার কথা বিজয়েন্দ্রর। কর্নাটকের সাম্প্রতিক বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের দাপটে বিজেপির ভরাডুবি হলেও শিকারিপুরা আসনে জিতে এই প্রথম বার বিধায়ক হয়েছেন বিজয়েন্দ্র। বিধানসভায় অনেকাংশেই মুখ ঘুরিয়ে নেওয়া লিঙ্গায়েত ভোটকে লোকসভার যুদ্ধের আগে ফের কাছে টানতে সেই বিজয়েন্দ্রকেই রাজ্য সভাপতি করছেন নরেন্দ্র মোদীরা। কিন্তু বিরোধীদের প্রশ্ন, এর পরে কোন এক্তিয়ারে কংগ্রেসকে পরিবারতন্ত্র নিয়ে আক্রমণ শানাচ্ছে বিজেপি?
এ দিকে, ঘরোয়া অসন্তোষের পারদও চড়ছে। কর্নাটকের রাজ্য বিজেপি সভাপতি পদের অন্যতম দাবিদার ছিলেন বর্ষীয়ান নেতা সি টি রবি। বিজয়েন্দ্র দু’বার রবিকে ব্যক্তিগত ভাবে অনুরোধ করেছেন, তাঁর সভাপতি পদে দায়িত্ব নেওয়ার অনুষ্ঠানে রবি যেন উপস্থিত থাকেন। কিন্তু রবি জানিয়ে দিয়েছেন, মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা ভোটের প্রচারের জন্য ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি ওই রাজ্যে থাকবেন। ফলে বিজয়েন্দ্রর অভিষেকের দিনে রাজ্যে তাঁর থাকা হচ্ছে না। যদিও রবির এই অনুপস্থিতির নেপথ্যে নিছক ‘ব্যস্ততা’র যুক্তি খুঁজতে নারাজ রাজনৈতিক শিবির। এর আগে বিজয়েন্দ্রর রাজ্য সভাপতি হওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ প্রসঙ্গে এই রবিই বলেছিলেন, ‘‘আমার মনেও অনেক প্রশ্ন আছে।’’
বিজেপি সাংসদ রমেশ জগাজিনাগি আবার বিজয়েন্দ্রকে রাজ্য সভাপতি করার জন্য নিজের দলকেই কার্যত ‘দলিত-বিরোধী’ তকমা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘নেতা যদি ধনী অথবা ভোক্কালিগা সম্প্রদায়ের হন, তা হলেও লোকে তাঁকে সমর্থন করে। কিন্তু দলিতের পাশে কেউ নেই। এ বড় দুর্ভাগ্যের।’’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়মিত ‘দলিত-বিরোধী’ বলে আক্রমণ করে কংগ্রেস। সেই অভিযোগেই সিলমোহর দিয়েছেন রমেশ।