Ambedkar Remarks Row

অম্বেডকর: এক হয়েও এক হল না ইন্ডিয়া মঞ্চ

সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের শেষ দিন বিজয় চকে দাঁড়িয়ে শাহের পদত্যাগ চেয়ে সরব হয়েছেন কংগ্রেসের প্রিয়ঙ্কা গান্ধী-সহ ডিএমকে, এসপি, শিবসেনার মতো বিরোধী দলের নেতারা। তাঁরা প্রতিবাদ মিছিল করে বিজয় চক থেকে হেঁটে এসেছেন সংসদ পর্যন্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৭:০০
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের করা বি আর অম্বেডকর সংক্রান্ত মন্তব্যের জেরে আজ একজোট হতে চেয়েও হল না বিরোধী ইন্ডিয়া। আজ সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের শেষ দিন বিজয় চকে দাঁড়িয়ে শাহের পদত্যাগ চেয়ে সরব হয়েছেন কংগ্রেসের প্রিয়ঙ্কা গান্ধী-সহ ডিএমকে, এসপি, শিবসেনার মতো বিরোধী দলের নেতারা। তাঁরা প্রতিবাদ মিছিল করে বিজয় চক থেকে হেঁটে এসেছেন সংসদ পর্যন্ত। কিন্তু এই কর্মসূচিতে যোগ দেয়নি তৃণমূল। বরং আজ দলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যেই কংগ্রেসের সমালোচনা করেছেন। সুদীপের নেতৃত্বে তৃণমূলের উপস্থিত সাংসদেরা লোকসভা মুলতুবি হয়ে যাওয়ার পরেই চলে গিয়েছেন অম্বেডকরের মূর্তির নীচে। সেখানে জয় ভীম বলে স্লোগান তুলে অমিত শাহের ক্ষমাপ্রার্থনার দাবি করেছেন করেছেন তাঁরা। সুদীপের দাবি, যদি শাহ ক্ষমা না চাইলে তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তবে কক্ষ সমন্বয়ের প্রশ্নে কংগ্রেসের একতরফা নীতির সমালোচনা করলেও তৃণমূল আজ কংগ্রেসের সঙ্গে ঐকমত্য বজায় রেখে লোকসভার স্পিকারের চা চক্রের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছে। এ দিনও কংগ্রেস মিছিলে শামিল হতে অনুরোধ করেছিল তৃণমূলকে। কিন্তু তৃণমূলের বক্তব্য, একতরফা ভাবে সব ঠিক করে শেষ মুহূর্তে জানালে চলবে না।

Advertisement

আজ সকালে বিজয় চকে দাঁড়িয়ে প্রিয়ঙ্কার বক্তব্য, “রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে এফআইআর করার পদক্ষেপই প্রমাণ করে দিচ্ছে বিজেপি কতটা মরিয়া। গোটা দেশ দেখছে তারা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করছে আবার মিথ্যাচারের ভিত্তিতে নতুন এফআইআর করেছে। আমরা চাই অমিত শাহ অম্বেডকরকে অপমান করার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চান এবং পদত্যাগ করুন।” প্রিয়ঙ্কা একটি প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান ধর্না করেন যাতে লেখা রয়েছে, ‘বাবাসাহেব কা অপমান নেহি সহেগা হিন্দুস্তান’। ইন্ডিয়া মঞ্চের বিভিন্ন সাংসদেরা ধ্বনি তোলেন ‘জয় ভীম’ বলে।

অন্য দিকে, সকালে অম্বেডকরের মূর্তির নীচে বিক্ষোভ দেখান সুদীপ, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রতিমা মণ্ডল, কীর্তি আজাদ, মিতালি বাগ, অসিত মালের মতো তৃণমূল সাংসদেরা। সুদীপ আজ ইঙ্গিত দিয়েছেন, বিজেপি এবং কংগ্রেস উভয় পক্ষই অম্বেডকরকে নিয়ে রাজনীতি করছে। তাঁর কথায়, “অম্বেডকরকে নিয়ে অমিত শাহের মন্তব্য গোটা দেশের মাথা নিচু করে দিয়েছে। আমরা তাই দাবি তুলছি, শাহ অবিলম্বে ক্ষমা চান। কে কার মাথা ফাটাচ্ছেন, কে কাকে ধাক্কা দিচ্ছেন— এ সব নিছকই নিজেদের রাজনীতি। প্রিয়ঙ্কা গান্ধীকে কংগ্রেস এই অধিবেশনে সামনে তুলে আনছে। আমরা এ সবের মধ্যে নেই।” তৃণমূল নেতার মতে, “তবে আমরা ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে আছি। কিন্তু এটা বুঝতে হবে যে ইন্ডিয়া মানেই কংগ্রেস নয়। অন্য আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। তারাও আমাদের সঙ্গে একমত যে কংগ্রেস একা ইন্ডিয়া জোটে ছড়ি ঘুরিয়ে যাবে, এমনটা চলবে না।”

Advertisement

ইন্ডিয়া মঞ্চের সঙ্গে তৃণমূল যে রয়েছে তা বোঝাতে আজ একটি পদক্ষেপও করেছে তৃণমূল। প্রত্যেক লোকসভা অধিবেশন শেষে স্পিকার তাঁর ঘরে চা চক্রে আমন্ত্রণ করেন সমস্ত দলের নেতাকে। উপস্থিত থাকেন প্রধানমন্ত্রীও। কিন্তু আজ অমিত শাহের মন্তব্যের পরে মোদী সরকারের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে ইন্ডিয়া মঞ্চের বাকি নেতাদের সঙ্গে তৃণমূলও ওই চা চক্র বয়কট করেছে। সুদীপ জানান, এসপি-র অখিলেশ যাদব এবং কংগ্রেসের কে সি বেণুগাপাল তাঁর কাছে এসে স্পিকারের চা চক্রে না যাওয়ার অনুরোধ জানান। পরিস্থিতি বিচার করে এবং ইন্ডিয়া মঞ্চের সঙ্গে থাকা এবং কংগ্রেসের থেকে রাজনৈতিক দূরত্ব বজায় রাখার নীতির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে চান সুদীপ। অখিলেশদের জানিয়ে দেন তাঁরাও মঞ্চের বাকি সদস্যদের মতোই স্পিকারের ঘরে যাবেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement