ফাইল চিত্র।
ত্রিপুরার উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণুকুমার দেববর্মণের একটি মন্তব্যে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ল বিজেপি। সম্প্রতি এক দলীয় সভায় তিনি দাবি করেন, ২০০০ সালে আইপিএফটি-কে স্বশাসিত জেলা পরিষদে ক্ষমতায় আনার সময় বিজেপি সাহায্য করেছিল। সেই সভার ভিডিয়ো দেখে সিপিএমের জনজাতি রাজনৈতিক সংগঠন গণমুক্তি পরিষদের সভাপতি জিতেন্দ্র চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, “এর মানে তো বিজেপি জঙ্গিদের মদত জুগিয়েছিল! তখনকার আইপিএফটি মানেই ছিল জঙ্গি সংগঠন এনএলএফটি-র রাজনৈতিক মুখোশ। উপমুখ্যমন্ত্রীকে এই মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে হবে। কারণ এই বক্তব্য উদ্বেগজনক।” এই বিষয়ে উপমুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য জানতে ফোন করা হলে রাজনৈতিক সচিবের মাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে ইচ্ছুক নন।
জিতেন্দ্রবাবুর দাবি, জঙ্গি গোষ্ঠী এনএলএফটি ওই সময়ে উপজাতি যুবসমিতি থেকে কিছু লোক এনে আইপিএফটি নামে রাজনৈতিক দলটি তৈরি করেছিল। সেই দল এনএলএফটি-র সন্ত্রাসে ভর করে স্বশাসিত জেলা পরিষদের ক্ষমতা দখল করে। বর্তমান রাজস্বমন্ত্রী নরেন্দ্রচন্দ্র দেববর্মা এদের পরামর্শদাতা ছিলেন। উপমুখ্যমন্ত্রী এখন বলছেন, সেই সময় এই আইপিএফটি-কে ক্ষমতায় আনতে সাহায্য করেছে বিজেপি। এর অর্থ, বিজেপির নেতাই কবুল করছেন, সে সময় জঙ্গিদের সাহায্য করেছে তাঁদের দল। সাংবিধানিক পদে থেকে তাঁর এই মন্তব্য আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ।
বাম সংগঠনের এই নেতার মতে, অতীত অভিজ্ঞতা এবং যীষ্ণুবাবুর স্বীকারোক্তি থেকে এটা পরিষ্কার, যে তাঁরা ২০০০ সালের মতো জঙ্গিদের সাহায্য নিয়ে স্বশাসিত জেলা পরিষদ দখল করার চেষ্টা করবেন। বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকারের ৩০ মাসের অপদার্থতা ও প্রতিশ্রুতি খেলাপের কারণে মানুষ তাদের বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে। এতে ভয় পেয়ে গিয়েছে শাসক জোট। এমনিতেই ত্রিপুরা দীর্ঘদিন সন্ত্রাসবাদীদের কবলে ছিল। রাজ্যে কিছু দিন পরে স্বশাসিত জেলা পরিষদের নির্বাচন। এখন আবার জঙ্গি গতিবিধি বেড়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গি সংগঠনগুলি চাঁদা তুলছে নোটিসের মাধ্যমে। এই অবস্থায় বিজেপির জঙ্গি-যোগ নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করা উচিত উপমুখ্যমন্ত্রীর।
যদিও জঙ্গি-কার্যকলাপ রোখার কাজে বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার আদৌ আন্তরিক চেষ্টা চালাবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বলেও মন্তব্য করেছে এই বাম নেতা। তিনি চান, মানুষই এ ব্যাপারে চাপ তৈরি করুক সরকারের উপরে।