নতুন পাঠ্যসূচিতে পর্যায় সারণির পাশাপাশি শক্তির উৎস এবং সুস্থায়ী সম্পদের ব্যবহার সম্পর্কিত অংশও বাদ দেওয়া হচ্ছে। —ফাইল চিত্র।
এনসিইআরটি (ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং) পাঠ্যসূচি থেকে এ বার বাদ গেল বিজ্ঞানের পর্যায় সারণি, ইতিহাসে ‘গণতন্ত্রের ধারণা’র মতো অধ্যায়! এর আগে সিলেবাস কমানোর পিছনে যে যুক্তিগুলি দেওয়া হয়েছিল, এ ক্ষেত্রেও সেই যুক্তি দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে ‘পড়ুয়াদের উপর চাপ কমাতে’ই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
এনসিইআরটি সূত্রের খবর, দশম শ্রেণির বিজ্ঞানের নতুন পাঠ্যসূচিতে পর্যায় সারণির পাশাপাশি শক্তির উৎস এবং সুস্থায়ী সম্পদের ব্যবহার সম্পর্কিত অংশও বাদ দেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি বাদ যাচ্ছে দেশের জনপ্রিয় আন্দোলন, রাজনৈতিক দল এবং গণতন্ত্রের সঙ্কট সম্পর্কিত বিষয়ও। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থা এনসিইআরটি-র তরফে বলা হয়েছে, পড়ুয়ারা চাইলে একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে এই বিষয়গুলি বিস্তারিত ভাবে পড়তে পারবেন। কিন্তু যে পড়ুয়া মাধ্যমিক কিংবা সমতুল কোনও পরীক্ষার পর বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করবেন না, তিনি পর্যায় সারণির মতো বিষয় সম্পর্কে কীভাবে জানতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
এর আগে সিবিএসই বোর্ডের দশম শ্রেণির বই থেকে বিবর্তনবাদের অধ্যায়টি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এনসিইআরটি। দেশের নানা প্রান্তের বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একজোট হন। তাঁরা খোলা চিঠি দিয়ে প্রতিবাদও জানান। এনসিইআরটির পাঠ্যবই থেকে সম্প্রতি থেকে মোগল ইতিহাস এবং গান্ধীহত্যার প্রসঙ্গও বাদ দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্য মহাত্মা গান্ধীর প্রয়াসকে অনেক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন যে ভাল ভাবে নেয়নি, সেই অংশটিও বাদ গিয়েছে। যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তরফে সিলেবাসে এই কাটছাঁট প্রসঙ্গে জানানো হয়েছে, অতিমারিকালে পড়ুয়াদের উপর অতিরিক্ত চাপ কমাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের রাজনৈতিক অভিসন্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ইতিহাসবিদদের একাংশ। পড়ুয়াদের বিকৃত ইতিহাস পড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে, এই অভিযোগেও সরব হয়েছেন তাঁরা।