উদয়পুর হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিধায়কের সমর্থকেরা। ছবি: পিটিআই।
দুই ভাইয়ের বিরোধকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল উদয়পুর রাজপ্রাসাদ! অভিযোগ, সোমবার রাতে প্রাসাদে ঢুকতে না পেরে বাইরে থেকে পাথর ছুড়েছেন রাজপরিবারের উত্তরসূরি তথা বিজেপি বিধায়ক বিশ্বরাজ সিংহ মেবার ও তাঁর সমর্থকেরা। ভিতর থেকে পাল্টা ইটবৃষ্টিতে জখম হয়েছেন তিন জন। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কোনও মতে সামাল দেওয়া গিয়েছে।
বিশ্বরাজ সিংহ মেবার রাজস্থানের রাজসমন্দের বিজেপি বিধায়ক। তিনি আবার মেবারের রাজপরিবারের উত্তরসূরিও। সোমবারই মেবারের ৭৭তম মহারানা হিসাবে অভিষিক্ত হয়েছেন বিশ্বরাজ। অভিষেকের পর পারিবারিক দেবতা ধুনি মাতা ও একলিঙ্গ শিবের মন্দিরে পুজো দিতে রাজপ্রাসাদে ঢুকতে চেয়েছিলেন তিনি। তখনই বাধে বিপত্তি। তাঁর খুড়তুতো ভাই লক্ষ্যরাজ সিংহ মেবার সাফ জানিয়ে দেন, প্রাসাদে প্রবেশাধিকার নেই বিশ্বরাজের। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা প্রাসাদের বাইরে অপেক্ষা করার পরেও ভিতরে ঢুকতে পারেননি রাজপুত্র!
রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজপ্রাসাদ চত্বর। অভিযোগ, প্রাসাদের বাইরে ভিড় জমাতে শুরু করেন বিশ্বরাজের সমর্থকেরা। রাত ১০টা নাগাদ বাইরে থেকে প্রাসাদ লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করেন তাঁরা। গেট ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টাও করেন কেউ কেউ। প্রাসাদের ভিতর থেকেও ধেয়ে আসে পাল্টা ইট-পাথর। শেষে পুলিশ-প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কোনও রকমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে দু’পক্ষের সংঘর্ষে তিন জন আহত হয়েছেন।
পিতা মহেন্দ্র সিংহের মৃত্যুর ১২ দিন পর সোমবার ঐতিহাসিক চিতোরগড় দুর্গে রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠান হয় বিশ্বরাজের। রাজপরিবারের প্রথা মেনে আঙুল কেটে সেই রক্ত দিয়ে কপালে এঁকে দেওয়া হয় রাজতিলক। এর পরেই তিনি ও তাঁর সমর্থকেরা আরাধ্য দেবতাদের আশীর্বাদ নিতে প্রাসাদে ঢুকতে চান। তবে বিশ্ব ‘যুবরাজ’ হলেও এখন উদয়পুরের রাজপ্রাসাদের দখল রয়েছে তাঁর কাকা শ্রীজি অরবিন্দ সিংহ মেবারের একটি সংস্থার হাতে। প্রাসাদের রক্ষণাবেক্ষণ থেকে শুরু করে সমস্ত কিছুর দেখাশোনা করে ওই সংস্থাই। তাই নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সোমবার বিশ্বরাজ ও তাঁর সমর্থকদের প্রাসাদে ঢুকতে দেননি অরবিন্দরা।