দেশের ৪৯তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে আগামী ২৭ অগস্ট শপথগ্রহণ করতে চলেছেন বিচারপতি উদয় ইউ ললিত।
নিজের উত্তরসূরীর নাম প্রস্তাব করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রমণা। দেশের ৪৯তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে আগামী ২৭ অগস্ট শপথগ্রহণ করতে চলেছেন বিচারপতি উদয় ইউ ললিত। শীর্ষ আদালতের পরবর্তী বিচারপতির নাম ঘোষণা করার জন্য বুধবার দেশের আইনমন্ত্রক, এনভি রমণাকে অনুরোধ জানিয়েছিল। প্রথা মোতাবেক, দেশের প্রধান বিচারপতি অবসরগ্রহণের আগে পরবর্তী প্রধান বিচারপতির নাম ঘোষণা করে যান। বর্তমানে অবসরগ্রহণের আগে আইনমন্ত্রক পরবর্তী প্রধান বিচারপতির নাম জানতে চেয়ে রমণাকে একটি চিঠি পাঠায়। দস্তুর মেনেই অবসরগ্রহণের একমাস আগে আইনমন্ত্রককে দেওয়া পাল্টা চিঠিতে নিজের উত্তরসূরীর নাম জানিয়ে দেন তিনি।
বিচারপতি ললিত অবশ্য খুব কম সময়ের জন্য প্রধান বিচারপতির পদে বসতে চলেছেন। তিন মাসেরও কম সময় তিনি এই পদে থাকবেন। চলতি বছরের ৮ নভেম্বর অবসরগ্রহণ করবেন তিনি। ললিত যদি শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির পদে বসেন, তবে এস এস সিক্রির পর তিনিই হবেন দ্বিতীয় প্রধান বিচারপতি, যিনি আইনজীবী হিসাবে কর্মজীবন শুরু করে প্রধান বিচারপতি হিসাবে কর্মজীবন শেষ করবেন।
ললিতের জন্ম মহারাষ্ট্রে ১৯৫৭ সালের ৯ নভেম্বর। ১৯৮৩ সালে আইনজীবী হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত তিনি বোম্বে হাইকোর্টের আইনজীবী ছিলেন। ১৯৮৬ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি দিল্লি হাইকোর্টে আইনজীবী হিসাবে যোগ দেন। এরপর ১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত দেশের ভূতপূর্ব অ্যাটর্নি জেনারেল সোলি সোরাবজির সঙ্গে কাজ করেছেন ললিত। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের অগস্ট মাসে সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হন ললিত। লতিতের বাবা ইউ আর ললিতও ছিলেন দিল্লি হাইকোর্টের প্রবীণ বিচারপতি এবং দিল্লি হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারক।
মূলত অপরাধ সংক্রান্ত মামলা নিয়ে কাজ করা এই বিচারপতিকে ২০১১ সালে সুপ্রিম কোর্ট টুজি স্পেকট্রাম-কাণ্ডে বিশেষ কৌঁসুলি হিসাবে নিয়োগ করে। যে বিশেষ বিচারবিভাগীয় বেঞ্চ তিন তালাক প্রথাকে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করেছিল, তার অন্যতম সদস্য ছিলেন বিচারপতি ললিত। গত বছর বোম্বে হাইকোর্টের স্পর্শ সংক্রান্ত রায় বদল করে ললিতের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, কোনও অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে সরাসরি স্পর্শ না করেও কোনওরকম যৌন পীড়ন করে থাকলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে পস্কো ধারায় মামলা রুজু করা যাবে। ললিতের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চই পদ্মনাভস্বামী মন্দির দেখভালের দায়িত্ব ত্রিবাঙ্কুর রাজপরিবারের হাত থেকে নিয়ে কোর্ট নিযুক্ত প্রশাসনিক কমিটির হাতে তুলে দেয়। ২০১৯ সালে অযোধ্যা মামলার রায়দানের জন্য যে বিচারবিভাগীয় বেঞ্চ গঠিত হয়, সেই বেঞ্চ থেকে স্বেচ্ছায় সরে আসেন ললিত। উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংহ-এর সঙ্গে একটি বিশেষ মামলায় সম্পর্কিত হওয়ার জন্য বেঞ্চে তাঁর উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী-সমাজকর্মী রাজীব ধবন।