Security Breach in Parliament

সিআইএসএফ পেল সংসদ ভবন চত্বরের নিরাপত্তার ভার, রংবোমার জেরে নতুন দায়িত্ব দিল্লি পুলিশকে?

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে ১৩ ডিসেম্বরের ঘটনার পরেই সংসদ ভবনের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমীক্ষা এবং পর্যালোচনার কাজ চালানো হয়েছিল। তারই ভিত্তিতে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:৩৫
Share:

সংসদ ভবনের সুরক্ষার দায়িত্ব নিল সিআইএসএফের এই বাহিনী। ছবি: পিটিআই।

সংসদের নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে সরানো হচ্ছে দিল্লি পুলিশকে। ঘটনাচক্রে, রংবোমা হানার ঘটনার ঠিক ন’দিনের মাথায় এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, গত বুধবারের (১৩ ডিসেম্বর) ঘটনার প্রেক্ষিতে নতুন এবং পুরনো সংসদ ভবন চত্বরের নিরাপত্তার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী (সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স বা সিআইএসএফ)-র হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার থেকেই নতুন দায়িত্বে বহাল হয়েছে সিআইএসএফ।

Advertisement

এত দিন পর্যন্ত সাধারণ ভাবে সংসদ ভবন চত্বরের নিরাপত্তার মূল দায়িত্বে থাকত দিল্লি পুলিশের একটি বিশেষ দল। আর এক কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফের একটি দল সংসদ চত্বর লাগোয়া বাইরের অঞ্চলের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল। এ ছাড়াও আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য দমকল আর সিআইএসএফের ইউনিট থাকত সংসদ ভবন চত্বরে। সংসদের সুরক্ষা সংক্রান্ত নজরদারির দায়িত্বে ছিল দিল্লি পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ইন্টেলিজেন্স উইং)। নতুন ব্যবস্থায় সংসদ চত্বর লাগোয়া এলাকার দায়িত্ব যাচ্ছে দিল্লি পুলিশের হাতে। প্রসঙ্গত, দিল্লি পুলিশ এবং সিআইএসএফ দুই বাহিনীরই নিয়ন্ত্রক শাহের মন্ত্রক।

সিআইএসএফের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করলেও দিল্লি পুলিশের হাতে নতুন এবং পুরনো সংসদ ভবনের সুরক্ষার কোনও দায়িত্ব থাকছে না। ভবন চত্বরে প্রবেশকারী ব্যক্তি এবং গাড়ি তল্লাশির দায়িত্বে থাকছে সিআইএসএফ। আগে এই দায়িত্বে ছিল দিল্লি পুলিশ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে ১৩ ডিসেম্বরের ঘটনার পরেই সংসদ ভবনের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমীক্ষা এবং পর্যালোচনার কাজ চালানো হয়েছিল। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, সরকারি ভবন আইন অনুসরণ করে সংসদ ভবনের নিরাপত্তার দায়িত্ব সিআইএসএফের সুরক্ষা এবং অগ্নি নির্বাপণ সংক্রান্ত বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সম্মতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্র্রী অমিত শাহের মন্ত্রক।

Advertisement

সংসদ সচিবালয় সূত্রের খবর, লোকসভা এবং রাজ্যসভার অধিবেশন কক্ষের পথে মোট চারটি বলয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। সেই চার স্তরের নিরাপত্তা পেরিয়েই গত ১৩ ডিসেম্বর লোকসভায় ঢুকে দর্শক আসন থেকে ফ্লোরে ঝাঁপ মেরেছিলেন সাগর শর্মা এবং মনোরঞ্জন ডি। ছুড়েছিলেন ‘ক্যানিস্টার সেল’। কিন্তু চার স্তরের নিরাপত্তা বলয়ের কোথাওই তাঁদের জুতোয় লুকিয়ে রাখা রংবোমার অস্তিত্ব ধরা পড়েনি। ঠিক একই সময় সংসদ ভবনের বাইরের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে ঢুকে রংবোমা নিয়ে ‘তানাশাহি নেহি চলেগা’ স্লোগান তুলেছিলেন অমল শিন্ডে এবং নীলম আজাদ।

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের অনেকেই একে ‘সুরক্ষার গুরুতর গাফিলতি’ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। তাঁদের মতে, দিল্লি পুলিশের নিরাপত্তা বলয়ের ‘বজ্র আঁটুনি’ যে কার্যত ‘ফস্কা গেরো’, চার বিক্ষোভকারী তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। ক্যানিস্টার সেলের বদলে জুতোয় বিস্ফোরক লুকিয়ে ঢুকে পড়লেও দিল্লি পুলিশ তা ঠেকাতে পারত না বলে তাঁদের মত। দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দর, সমুদ্র এবং নদীবন্দর এবং শিল্পক্ষেত্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ বাহিনীর নিরাপত্তা বলয় তুলনায় অনেক আঁটসাঁট বলেই তাঁদের মত। তা ছাড়়া, আগুন নেভানোর বিশেষ প্রশিক্ষণ রয়েছে ওই কেন্দ্রীয় বাহিনীর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement