Bangladesh MP Death

সাংসদ খুনের তদন্তে সিআইডি নেপাল সীমান্তে

সিআইডি সূত্রের খবর, শাহিনের অন্যতম প্রধান সহযোগী সিয়াম, কসাই জিহাদকে নিয়ে কয়েক মাস ধরে চিনার পার্কে শাহিনের ফ্ল্যাটেই ছিল। খুনের পরিকল্পনা কার্যকর করার বিভিন্ন ধাপে সিয়ামের কার্যকর ভূমিকা ছিল বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৪ ০৭:২০
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম খুনের ঘটনায় মূল চক্রী আখতারুজ্জামান ওরফে শাহিনকে এ দেশের তদন্তকারীদের হাতে নিয়ে আসতে তোড়জোড় শুরু হয়েছে।

Advertisement

প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, আমেরিকা ও ভারতের মধ্যে অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তি কাজে লাগিয়ে শাহিনকে আনাটাই তদন্তের এর পরের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। আজিম ও শাহিন পুরনো বন্ধু। ব্যবসায়িক লেনদেন থেকে তাঁদের মধ্যে সংঘাত তৈরি হয় বলে পুলিশ সূত্রের খবর। শাহিনকে হাতে পেলে এত দীর্ঘ পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির ভিত্তিতে খুনের সম্ভাব্য কারণ পরিষ্কার হবে বলে গোয়েন্দাদের অভিমত।

এর পাশাপাশি এই খুনের মামলার আর এক অভিযুক্ত, বাংলাদেশি নাগরিক সিয়ামকে পাকড়াও করতেও ভারত-নেপাল সীমান্তের নানা এলাকায় সিআইডি-র বিশেষ তদন্তকারী দল খোঁজখবর করছে। সূত্রের খবর, তদন্তকারীদের দলটি নেপালের বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ রেখে চলেছে। তারা কিছুটা চিন্তিত, কারণ এর আগে বার বার নানা মামলায় অভিযুক্তেরা এ রাজ্যের নেপাল সীমান্ত পার হয়ে কাঁকরভিটা হয়ে কাঠমান্ডু পৌঁছেছে বা বিহারের রক্সৌল থেকে নেপালের বীরগঞ্জের দিকে ঢুকেছে। এমনকি আজিম খুনের মূল অভিযুক্ত শাহিনও সম্ভবত বাংলাদেশ থেকে নেপাল হয়েই আমেরিকায় ফেরে। আবার তদন্তকারীদের একটি অংশের দাবি, বাংলাদেশ পুলিশও সিয়ামকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইছে। দু’পক্ষই চেষ্টা করায় ওই প্রক্রিয়া কিছুটা ধাক্কা খাচ্ছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার কলকাতা ছাড়ার আগে বাংলাদেশের ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে নেপালে চিঠি পাঠিয়ে সিয়ামের অবস্থান বিষয়ে ওদের জানিয়েছেন।’’ তাঁর আশা, খুব শিগগিরই ভাল খবর আসবে নেপাল থেকে।

সিআইডি সূত্রের খবর, শাহিনের অন্যতম প্রধান সহযোগী সিয়াম, কসাই জিহাদকে নিয়ে কয়েক মাস ধরে চিনার পার্কে শাহিনের ফ্ল্যাটেই ছিল। খুনের পরিকল্পনা কার্যকর করার বিভিন্ন ধাপে সিয়ামের কার্যকর ভূমিকা ছিল বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন। আজিম খুনের অভিযুক্তদের মধ্যে এখনও অধরা শাহিন, সিয়াম, মুস্তাফিজুর, ফয়জ়লের নামে ইতিমধ্যে ‘লুকআউট নোটিস’ জারি করা হয়েছে। তারা বিদেশে পালিয়েছে আশঙ্কা করে ইন্টারপোলের ‘রেড কর্নার নোটিস’ জারিরও প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশের সাংসদ খুনের তদন্তে সিআইডি-র তরফে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট-ও গড়া হয়েছে। নেতৃত্বে রয়েছেন একজন আইজি। মোট ১২ জনের তদন্তকারী দলে সিআইডি-র দু’জন ডিআইজি এবং একজন পুলিশ সুপারও রয়েছেন। এ দিন সিটের তরফে নিউ টাউনের বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি-র ফুটেজ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি, অভিযুক্তেরা যে গাড়ি ব্যবহার করেছিল, তার চালকদের বয়ান নথিভুক্ত করা হয়েছে। তবে নিউ টাউনের আবাসনের সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে মাংসপিণ্ড বা দেহাংশ উদ্ধার হলেও কসাই দিয়ে আলাদা করা দেহের হাড় বা মাথা উদ্ধার হয়নি। খোঁজ মেলেনি সাংসদের পোশাক, জুতোর। এ সবের খোঁজে এ দিনও ভাঙড়ে বাগজোলা খালে তল্লাশি চলে।

সিআইডি-র আশা, আগামী সপ্তাহের গোড়াতেই মাংস বা দেহাংশ নিয়ে প্রাথমিক ফরেন্সিক রিপোর্ট চলে আসবে। এর পরেই ডিএনএ নমুনা মেলানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। সাংসদেরকন্যার শীঘ্রই কলকাতায় আসার কথা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement