প্রতীকী চিত্র।
তিব্বতীদের নিয়ে নতুন বাহিনী গড়ছে চিন! ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এ কাজে অনেকটা এগিয়েওছে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। সীমান্ত লাগোয়া তিব্বতের গ্রামে ঘুরে ঘুরে গত বেশ কিছুদিন ধরেই তারা চালাচ্ছে উপযুক্ত সেনাকর্মী বেছে নেওয়ার কাজ। বিষয়টি সামনে এসেছে তিনটি আলাদা আলাদা গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে। তিনটি রিপোর্টেই প্রকাশিত একই তথ্য হাতে পেয়ে কিছুটা সতর্ক হয়েছে নয়াদিল্লি। তারা জানিয়েছে, বিষয়টির উপর নজর রাখছে তারা।
লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে সেনা সরানো নিয়ে দিন কয়েক আগেই বৈঠকে বসেছিল ভারতীয় এবং চিনা সেনার প্রতিনিধি দল। তবে এ-বিষয়ে ভারত-চিনের শেষ বৈঠকটি তেমন ফলপ্রসূ হয়নি। সীমান্তে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার ব্যাপারে একমত হলেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার অন্য এলাকা গুলি থেকে সেনা নিষ্ক্রিয় করার ব্যাপারে কথা এগোয়নি দু’পক্ষের সেনা প্রতিনিধিদের। সেই বৈঠকের এক সপ্তাহ পার না হতেই তিব্বতীদের নিয়ে চিনাসেনার নতুন বাহিনী তৈরির খবরে কিছুটা চিন্তায় কেন্দ্র। যে চিন্তা সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে, তা হল—প্যাংগংয়ে কি ফের আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে চিন? নাহলে বেছে বেছে অতিরিক্ত উচ্চতা আর তীব্র ঠাণ্ডা সহ্য করতে পারা তিব্বতীদের নিয়েই বিশেষ বাহিনী গড়বে কেন তারা?
নয়াদিল্লির প্রতিরক্ষা দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘ব্যাপারটায় একটা সরাসরি যোগসূত্র স্পষ্ট। আগেই আমাদের কাছে রিপোর্ট ছিল, তিব্বতে অতিরিক্ত উচ্চতায় সেনা মোতায়েনে সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছিল চিনা সেনাকে। বহু চিনা সেনা অক্সিজেনের অভাববোধে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। এরই মধ্যে চিনের নতুন বাহিনী সংক্রান্ত গোয়েন্দা রিপোর্ট বেশ তাৎপর্য্যপূর্ণ। ভারতীয় এবং ভারতে বসবাসকারী তিব্বতিদের প্রতি বিশেষ বার্তাবহও।’’
ভারতে বসবাসকারী তিব্বতী জওয়ানদের নিয়ে স্পেশ্যাল ফ্রন্টিয়ার বাহিনী বা এসএফএফ দীর্ঘদিন ধরেই মোতায়েন রয়েছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায়। প্যাংগংয়ে ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষের সময়ে এই বাহিনীর কাছে সুবিধা করতে পারেনি চিনা সেনারা। অতিরিক্ত উচ্চতা আর তীব্র ঠাণ্ডায় চিনা সেনারা অসুস্থ হয়ে প়ড়েছিল বলেও খবর ছিল। যার জেরে কিছুটা বাধ্য হয়েই প্যাংগং থেকে চিন সেনা সরাতে বাধ্য হয়েছিল বলে সেসময় জানিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা। ভারত নিবাসী তিব্বত বিশেষজ্ঞ ক্লড আরপি বলেছিলেন, ভারতীয়দের মতো চিনা সেনারা অতিরিক্ত উচ্চতায় যুদ্ধ করতে অভ্যস্ত নয়। তাই প্যাংগং লাগোয়া প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় অতিরিক্ত উচ্চতা আর অক্সিজেনের অভাব পিএলএ-র কাছে একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এর আগে পিএলএ কখনও কোনও বিশেষ জাতিকে নিয়ে কোনও আলাদা বাহিনী তৈরি করেনি। তবে কি এই নতুন বাহিনীর অবতারণা ভারতের তিব্বতী সেনার পাল্টা হিসেবেই। সেক্ষেত্রে প্যাংগং লাগোয়া প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় চিনের ফের আক্রমণের পরিকল্পনার সম্ভাবনাও তাই উড়িয়ে দিতে পারছে না গোয়েন্দারা।