২৪ ঘণ্টা আগে চিনা সরকারি সংবাদপত্রে ছিল সিকিমের স্বাধীনতার দাবি এবং উত্তর-পূর্ব ভারতে অশান্তি উস্কে দেওয়ার হুমকি। আজ চিনের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়ে দিল, ডোকা লা-য় যে ভাবে দু’দেশের সামরিক উত্তেজনা বেড়েছে তাতে হামবুর্গে নরেন্দ্র মোদী এবং শি চিনফিংয়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরিস্থিতি নেই। দিল্লির পাল্টা বক্তব্য, ভারত তো কখনওই বলেনি, দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে! বরং আগ বাড়িয়ে চিনই বলেছিল, হামবুর্গে ব্রিকস বৈঠকের ফাঁকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ও চিনা প্রেসিডেন্টের আলাদা কথা হতে পারে। এখন চিনই তা বাতিলের কথা বলছে। স্রেফ হাওয়া গরম করতে চাইছে বেজিং।
দিল্লি অবশ্য বলেছে, হামবুর্গে আগামিকাল জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ব্রিকস-এর মিনি বৈঠক হবে। কানাডা, জাপান এবং মেক্সিকোর সঙ্গে সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলিও হচ্ছে। ব্রিকস-এর সদস্য ব্রাজিল, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত এবং চিন। কাজেই বৈঠকে যোগ দিলে একান্তে না হলেও আলোচনার টেবিলে মোদী-চিনফিংয়ের দেখা হচ্ছেই। যেখানে থাকবেন অন্য তিন রাষ্ট্রপ্রধানও। বহুপাক্ষিক মঞ্চে মত বিনিময়ের সময়ে মোদী-চিনফিংয়ের মধ্যে সামান্য বাক্যালাপও হতে পারে কি না, তা নিয়েই জল্পনা।
আরও পড়ুন:পশ্চিমকে বাঁচান, আহ্বান ট্রাম্পের
গত কাল চিনের সরকারি কাগজ গ্লোবাল টাইমস বলেছিল, ‘‘সিকিমের ভারতে অন্তর্ভুক্তি ২০০৩ সালে মেনে নিয়েছিল বেজিং। কিন্তু তা পুনর্বিবেচনার সময় এসেছে। চিনের বহু কণ্ঠস্বর সিকিমের স্বাধীনতার দাবিকে তুলে ধরবে।” ঘটনাচক্রে আজই সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিং বলেছেন, ‘‘চিন এবং পশ্চিমবঙ্গের মাঝখানে স্যান্ডউইচ হয়ে রয়েছে সিকিম।’’ চিন এ-ও বলেছিল, দলাই লামাকে ব্যবহার করে ভারতের আর কোনও লাভ হবে না। সেই সঙ্গে জারি সামরিক হুঁশিয়ারিও। সংবাদ সংস্থা জিনহুয়া জানিয়েছে, তিব্বত সীমান্তে ৫১০০ মিটার উচ্চতায় অত্যাধুনিক ট্যাঙ্ক নিয়ে মহড়া দিয়েছে চিনা সেনা। পাহাড়ি যুদ্ধে চিন যে তৈরি, তা বোঝাতে খবরের সঙ্গে ছবিও প্রকাশ করেছে তারা।
অনেকের বক্তব্য, উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে বেজিং যুদ্ধের হুঙ্কার দিচ্ছে ঠিকই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কূটনৈতিক পথে সঙ্কট নিরসনে ভারতের মতো ব্যগ্র চিনও। গত ১৫ বছরে যে দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২৪ গুণ বেড়েছে, আজকের বাজারে সেই ভারতের সঙ্গে সত্যিই যুদ্ধে নামার কোনও পরিকল্পনা নেই বেজিংয়ের। গ্লোবাল টাইমসও আজ বলেছে, ‘‘চিন এখনও কূটনৈতিক পথেই সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।’’