India

মস্কোয় দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ।। আগে সেনা সরাক চিন: জয়শঙ্কর

চিন থেকে আসা লগ্নি, পণ্য পরিষেবার উপরে প্রাচীর তোলার ভাবনা শুরু করে দিয়েছে ভারত, যা বেজিংয়ের কাছে বেশ চাপের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৩৩
Share:

তিন বিদেশমন্ত্রী: ভারতের এস জয়শঙ্কর, রাশিয়ার সের্গেই লাভরভ এবং চিনের ওয়াং ই (বাঁ দিক থেকে)। বৃহস্পতিবার মস্কোয়। এএফপি

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার বারুদের গন্ধ পৌঁছে গেল মস্কোয়। আজ সেখানে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-এর পার্শ্ববৈঠকে দু’দফায় মুখোমুখি হলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। মধ্যাহ্নভোজনে ত্রিপাক্ষিক স্তরে আলোচনায় বসলেন ভারত, চিন এবং রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী। আর সন্ধ্যায় শুধু ভারত এবং চিন। ভারতীয় সময় গভীর রাত পর্যন্ত চলে সীমান্তে শান্তি এবং সুস্থিতি ফিরিয়ে আনার জন্য আলোচনা। বৈঠকের শেষে কোনও দেশের তরফেই আনুষ্ঠানিক ভাবে এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। যদিও সংবাদ সংস্থা পিটিআই একটি সূত্রকে উল্লেখ করে জানিয়েছে, জয়শঙ্কর-ওয়াং বৈঠকে আলোচনার মূল বিষয় ছিল লাদাখ। সূত্রটির কথায়, ‘‘লাদাখ সীমান্তে উত্তেজনা কমানো এবং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সেনা সরানোর বিষয়েই আলোচনা হয়েছে।’’ লাদাখ সংঘর্ষ শুরুর পরে এই প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ হল জয়শঙ্কর এবং ওয়াং-এর।

Advertisement

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, বৈঠকে জয়শঙ্কর তাঁর গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন ওয়াং-কে। সীমান্তে এই সংঘাতের সঙ্গে যে ভারত এবং চিনের সামগ্রিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সংযুক্ত হয়ে গিয়েছে, সেই বার্তাও দিয়েছেন তিনি। সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে হলে সীমান্ত থেকে সেনা সরাতে হবে চিনকে— এই বার্তাই কয়েক দিন ধরে ধারাবাহিক ভাবে দিয়ে চলেছে দিল্লি, আজও যার অন্যথা হয়নি।

চিন থেকে আসা লগ্নি, পণ্য পরিষেবার উপরে প্রাচীর তোলার ভাবনা শুরু করে দিয়েছে ভারত, যা বেজিংয়ের কাছে বেশ চাপের। ভারতের বিপুল বাজার তাদের কাছে লোভনীয়। ভারতে চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী স্লোগান তুলেছেন আত্মনির্ভর ভারতের, তাতেও চিনা পণ্য আমদানি কমানোর দিকে নিশানা স্পষ্ট। এর পরেও অবশ্য ভারতের বক্তব্য, আলোচনার মাধ্যমেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় স্থিতাবস্থা ফেরানো জরুরি। সেই জন্য ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে পিএলএ-র সম্পূর্ণ পশ্চাদপসরণ, সীমান্ত থেকে সেনা কমানোর কথা আজ বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেছেন জয়শঙ্কর।

Advertisement

আরও পড়ুন: বেজিংকে বার্তা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর, বায়ুসেনায় রাফালের যোগ, চুপ প্রধানমন্ত্রী​

আরও পড়ুন: প্রদেশ কংগ্রেসের ভাগ্যে ফের ‘পরিযায়ী’ সভাপতি

ভারতের উদ্বেগের কারণ— সাম্প্রতিক উপগ্রহচিত্র জানাচ্ছে, প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণে ভারতীয় সেনার প্রতিরোধে পিছু হটার পরে এ বার হ্রদের উত্তরের ফিঙ্গার এরিয়ায় আগ্রাসী ভূমিকায় চিনা ফৌজ। ফিঙ্গার-৪-এ ফিরে এসেছে তারা! বেজিংয়ের তরফে ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘনের যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তার সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে ‘ম্যাক্সার টেকনোলজিস’-এর ওই উপগ্রহ ছবি। আজ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক চলাকালীনও চিনের সরকারি মুখপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’ শাসিয়েছে, ভারতীয় সেনা যদি প্যাংগংয়ের দক্ষিণ পাড় থেকে না-সরে, গোটা শীতকাল জুড়ে চিন ‘প্রতিরোধ’ চালিয়ে যাবে। ভুগতে হবে ভারতকেই!

জুলাইয়ের গোড়ায় ফিঙ্গার-৪ থেকে পিছিয়ে গিয়েছিল চিনা সেনা। কিন্তু নয়া উপগ্রহ চিত্র বলছে, সেখানে শক্তি বাড়িয়ে ফিরে এসেছে তারা। সেখানে দেড় কিমিরও বেশি এলাকা জুড়ে চিনা শিবির। গোটা কুড়ি ‘হাই মবিলিটি মাল্টিপারপাস হুইল্‌ড ভেহিক্‌ল’ (হাম্ভি) এবং সারি সারি সেনা পরিবহণ যানের সমাবেশ!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement