বছর দশেকের বিবাহিত স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ করেছেন সাজাপ্রাপ্ত যুবক। প্রতীকী ছবি।
স্বামীর সঙ্গে যৌন সঙ্গমে রাজি না থাকায় নাবালক সন্তানের সামনেই স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করেছিলেন চেন্নাইয়ের এক যুবক। এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত ওই যুবককে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দিল চেন্নাইয়ের এক জেলা আদালত। খুনের সর্বোচ্চ সাজা হিসাবে অভিযুক্তের যাবজ্জীবন কারাবাসের আবেদন করলেও তাতে সাড়া দেয়নি জেলা আদালত। আদালতের মতে, স্ত্রীর থেকে ‘আচমকা অতি উস্কানি’র জেরেই তাঁকে খুন করেছেন স্বামী।
বুধবার ওই মামলার রায় দিয়েছেন চেন্নাইয়ে এক জেলা আদালতের বিচারক মহম্মদ ফারুখ। তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘‘অভিযুক্তের সঙ্গে যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হতে চাননি তাঁর স্ত্রী। উল্টে অভিযুক্তকে জানিয়েছেন, কেবলমাত্র অন্য পুরুষের সঙ্গে যৌনাচার করবেন। যা নিয়ে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। আদালতের এটা জানাতে দ্বিধা নেই যে, উস্কানি দেওয়ার পক্ষে এটা যথেষ্ট। স্ত্রীর কাছ থেকে আচমকা এই অতি উস্কানির জেরেই তাঁকে খুন করেছেন অভিযুক্ত।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১৮ সালে ২৭ অগস্ট চেন্নাইয়ে পশ্চিম আন্নানগর এলাকায় নিজেদের বাড়িতে স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করেন শ্রীনিবাসন। বছর দশেকের বিবাহিত স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগও করেছেন তিনি। অভিযোগ, ওই পুরুষের সঙ্গে সঙ্গমে আপত্তি না থাকলেও স্বামীর সঙ্গে শারীরিক মিলনে রাজি ছিলেন না স্ত্রী।
আদালতে এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা দিয়েছে দম্পতির বারো বছরের ছেলে। ঘটনার সময় যার বয়স ছিল ৮। ছেলের দাবি, মাকে খুনের পর কোনও কারণবশত তাঁর দেহে মশামাছি তাড়ানোর ওষুধ ছড়িয়ে ঘুমাতে যান বাবা।
শ্রীনিবাসনের শাশুড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এই মামলায় অভিযুক্ত ৩৪ বছরের ওই যুবকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ এবং ৪৯৮এ ধারায় খুন এবং নৃশংসতার অভিযোগ তোলে পুলিশ। যদিও রায়দানের সময় শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধে উস্কানির ফলে অনিচ্ছাকৃত ও দুর্ঘটনাবশত খুনের অর্থাৎ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারার পার্ট ১-এর অভিযোগ এনেছেন। সেই সঙ্গে স্ত্রীর প্রতি নৃশংসতার অভিযোগও খারিজ করে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে শ্রীনিবাসনকে ৫,০০০ টাকা জরিমানা এবং তাঁর নাবালক সন্তানকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।