অভিযুক্ত প্রেমিক সাহিল গহলৌত এবং নিহত প্রেমিকা নিক্কি যাদব। ফাইল চিত্র ।
প্রেমিকা নিক্কি যাদবের সঙ্গে একত্রবাসে থাকতেনই না অভিযুক্ত প্রেমিক সাহিল গহলৌত। নিক্কি হত্যাকাণ্ডে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তদন্তে উঠে এসেছে যে, নিক্কি না কি আলাদা একটি হস্টেলে ঘর ভাড়া করে থাকতেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলির ক্রম পুনরায় তৈরি করতে সাহিলকে খুনের ঘটনাস্থল উত্তর দিল্লির কাশ্মীর গেট এলাকা এবং তাঁর ধাবায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এর পর তাঁকে নিকির ওই ভাড়া ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে পুলিশের সূত্র জানিয়েছে।
পুলিশের এক জন আধিকারিক জানিয়েছেন, অভিযুক্তকে নিক্কির বাড়িতেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে অভিযুক্তের শাস্তির দাবি জানিয়েছে নিহতের পরিবার।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, আশপাশের এলাকা থেকে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে তারা। যে গাড়িতে নিক্কিকে খুন করা হয়েছে, তা সাহিলের ভাই আশিস গহলৌতের নামে থাকায় তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ডেকে পাঠিয়েছে বলে সূত্রের খবর।
পুলিশ সূত্রে খবর, দিল্লির নিজামউদ্দিন এবং আনন্দ বিহার রেলওয়ে স্টেশনেও নিয়ে যাওয়া হবে সাহিলকে। এই এলাকা থেকেই নিক্কিকে গাড়িতে তোলা হয় বলে পুলিশ অনুমান করছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ৯ এবং ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যবর্তী রাতে গাড়ির ভিতরে মোবাইল ফোনের ডেটা কেবলের তার নিক্কির গলায় পেঁচিয়ে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন সাহিল। খুনের পর নিক্কির মোবাইল ফোন থেকে সমস্ত তথ্য মুছে ফেলেন তিনি। নিক্কির দেহ নিয়ে গিয়ে ভরে দেন ধাবার ফ্রিজে। এর পর হাত-মুখ ধুয়ে ধোপদুরস্ত বিয়ের পোশাকে অন্য মহিলাকে বিয়ে করতে বেরিয়ে যান সাহিল।
নিক্কিকে খুনের আগে তিনি ঝাঁ-চকচকে পার্টির মাধ্যমে বাগ্দান পর্ব সেরেছিলেন বলেও পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই নিক্কির ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে। মুছে ফেলা তথ্য পুনরুদ্ধার করতে এই ফোন ফরেন্সিকে পাঠানো হবে বলেও পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদের সময় সাহিল জানিয়েছেন, বাড়ি থেকে পছন্দ করা মেয়েটিকে বিয়ে করার জন্য তাঁকে ক্রমাগত জোর করা হচ্ছিল। তিনি বুঝতে পারছিলেন না যে, ওই মুহূর্তে তিনি ঠিক কী করবেন। একত্রবাসের সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাবেন, না কি পরিবারের সদস্যদের কথা মেনে অন্য মেয়েকে বিয়ে করবেন। পুলিশকে এমনটাই জানিয়েছেন সাহিল। কাশ্মীরি গেট আইএসবিটি-র কাছে পৌঁছনোর পর গাড়ির মধ্যে নিক্কির সঙ্গে ঝামেলা শুরু হয় সাহিলের। বিয়ে নিয়ে আগে থেকেই মাথাগরম ছিল তাঁর। তার উপর নিক্কি ঝগড়া শুরু করে দেওয়ায় আর শান্ত থাকতে পারেননি সাহিল। তখনই রাগের মাথায় নিক্কিকে তিনি খুন করেন বলে জানিয়েছেন।
দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির বাসিন্দা সাহিলকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। সেখানেই চলছে তাঁর জিজ্ঞাসাবাদ। উঠে আসছে নতুন নতুন তথ্য।