Cheetah in India

কেউ থুরথুরে বুড়ো, কেউ ছটফটে শিশু! আফ্রিকান চিতাদের বয়স কত? কত দিনই বা বাঁচে?

চল্লিশের দশকে ভারতের বনভূমি থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে চিতা। তাদের ফিরিয়ে আনতে আফ্রিকা থেকে দফায় দফায় এই পশুগুলিকে নিয়ে আসা হচ্ছে। আশা, তারা পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ভোপাল শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩২
Share:

দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দ্বিতীয় দফায় ১২টি চিতা এনেছে ভারত সরকার। ফাইল ছবি।

দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দ্বিতীয় দফায় যে ১২টি চিতা এনেছে ভারত সরকার, তাদের বয়সের বৈচিত্র চোখে পড়ার মতো। ২ থেকে ৮, সব রকম বয়সের চিতা আনা হয়েছে। তাদের ঠিকানা এখন মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যান।

Advertisement

শনিবার দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ৭টি পুরুষ এবং ৫টি স্ত্রী চিতা ভারতে এসে পৌঁছেছে। কুনোর জঙ্গলে তাদের খাঁচামুক্ত করেছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান এবং কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। এই চিতাগুলির মধ্যে সবচেয়ে কমবয়সি যে, তার বয়স ২ বছর ৪ মাস। এ ছাড়া, আরও ৩টি চিতা ২০২০ সালের জুন মাসে জন্মেছে। তাদের মধ্যে একটি পুরুষ এবং দু’টি স্ত্রী।

আফ্রিকা থেকে আসা একটি চিতার বয়স ৭ বছর ১০ মাস, যা বাকিদের তুলনায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সবচেয়ে বৃদ্ধ চিতাটির বয়স ৮ বছর ৩ মাস। সেটি একটি পুরুষ চিতা।

Advertisement

পশু বিশেষজ্ঞেরা জানান, আফ্রিকান চিতার আয়ু সাধারণত ৮ থেকে ১০ বছর। কখনও কখনও তা ১২ বছর হয়। ব্যতিক্রম ছাড়া চিতা তার বেশি বাঁচে না। জীবনের বাকি সময়টুকু কুনোর জঙ্গলেই কাটবে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে উড়ে আসা অতিথিদের।

এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিনের দিন আফ্রিকার নামিবিয়া থেকে ৮টি চিতা আনা হয়েছিল। তাদের মধ্যে ছিল ৫টি স্ত্রী এবং ৩টি পুরুষ চিতা। নামিবিয়ার চিতাদের বয়স ছিল ২ থেকে সাড়ে ৫ বছরের মধ্যে। প্রথম দফায় আনা সেই চিতাদের কুনোর জঙ্গলে খাঁচামুক্ত করেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। তার পর ৫ মাসের মধ্যে আরও এক দল চিতা আনল কেন্দ্রীয় সরকার।

দ্বিতীয় দফার এই ১২টি চিতাকে ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান আইএএফ সি-১৭-এ দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছে। ১০ ঘণ্টার উড়ানে গোয়ালিয়রে পৌঁছেছে চিতাগুলি। তার পর সেখান থেকে বায়ুসেনার কপ্টারে তাদের কুনোর জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

আপাতত এই চিতাদের কুনোর জঙ্গলে সংরক্ষিত এলাকায় রাখা হয়েছে। কিছু দিন নিভৃতবাসে থাকার পর তাদের বৃহত্তর জঙ্গলে ছাড়া হবে। নামিবিয়ার চিতাদের সঙ্গেও মিশতে পারবে তারা।

চল্লিশের দশকে ভারতের বনভূমি থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে চিতা। তাদের ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যেই আফ্রিকা থেকে দফায় দফায় এই পশুগুলিকে নিয়ে আসা হচ্ছে। ভারতের পরিবেশের সঙ্গে চিতাগুলি মানিয়ে নিতে পারবে বলেই আশা কর্তৃপক্ষের।

কিন্তু বিদেশ থেকে চিতা নিয়ে আসা নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। জিনগত বিবর্তন বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, প্রায় ৫০০০ বছর আগে আফ্রিকার চিতার (বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘অ্যাসিনোনিক্স জুবেটাস জুবেটাস’) থেকে জন্ম হয়েছিল তার জাতভাই এশীয় চিতার (বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘অ্যাসিনোনিক্স জুবেটাস ভ্যানাটিকাস’)। সেই থেকে তারা ভিন্ন উপপ্রজাতি। ১৯৪৭ সালে মধ্যভারতের সরগুজায় (বর্তমানে ছত্তীসগঢ় রাজ্যে) শেষ বার তাদেরই সন্ধান মিলেছিল। অর্থাৎ, ভারতের মাটি কখনওই কেন্দ্রের আনা এই চিতাদের বাসভূমি ছিল না। তবে বিতর্কের আবহেই দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে মোট ১০০টি চিতা আনার চুক্তি করেছে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement