দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আরও ১২টি চিতা ভারতে নিয়ে আসা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আরও ১২টি চিতা ভারতে এল। শনিবার সকালে গোয়ালিয়রের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে চিতাগুলিকে নামানো হয়েছে। তার পর তাদের ছাড়া হয়েছে মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানে।
কয়েক মাস আগেই নামিবিয়া থেকে ৮টি চিতা ভারতে আনা হয়েছিল। কুনোর জঙ্গলে তাদের খাঁচা উন্মুক্ত করেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেপ্টেম্বরের পর ৫ মাসের মধ্যে আরও এক দল চিতা আনল কেন্দ্রীয় সরকার।
দ্বিতীয় দফার এই ১২টি চিতাকে ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান আইএএফ সি-১৭-এ দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছে। ১০ ঘণ্টার উড়ানে গোয়ালিয়রে পৌঁছেছে চিতাগুলি। তার পর সেখান থেকে বায়ুসেনার কপ্টারে তাদের কুনোর জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
কুনোয় সংরক্ষিত এলাকায় চিতাগুলিকে খাঁচামুক্ত করেছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান এবং কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। নতুন এই ১২টি চিতার মধ্যে ৭টি পুরুষ এবং ৫টি মহিলা। কিছু দিন নিভৃতবাসে থাকার পর চিতাগুলিকে বৃহত্তর জঙ্গলে ছাড়া হবে।
চল্লিশের দশকে ভারতের বনভূমি থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে চিতা। তাদের ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যেই আফ্রিকা থেকে দফায় দফায় এই পশুগুলিকে নিয়ে আসা হচ্ছে। ভারতের পরিবেশের সঙ্গে চিতাগুলি মানিয়ে নিতে পারবে বলেই আশা কর্তৃপক্ষের।
কিন্তু বিদেশ থেকে চিতা নিয়ে আসা নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। জিনগত বিবর্তন বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, প্রায় ৫০০০ বছর আগে আফ্রিকার চিতার (বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘অ্যাসিনোনিক্স জুবেটাস জুবেটাস’) থেকে জন্ম হয়েছিল তার জাতভাই এশীয় চিতার (বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘অ্যাসিনোনিক্স জুবেটাস ভ্যানাটিকাস’)। সেই থেকে তারা ভিন্ন উপপ্রজাতি। ১৯৪৭ সালে মধ্যভারতের সরগুজায় (বর্তমানে ছত্তীসগঢ় রাজ্যে) শেষ বার তাদেরই সন্ধান মিলেছিল। অর্থাৎ ভারতের মাটি কখনওই কেন্দ্রের আনা এই চিতাদের বাসভূমি ছিল না।
বিতর্কের আবহেই সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ১০০টি চিতা আনার চুক্তি করেছে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রক। ভূপেন্দ্র জানিয়েছেন, আগামী কয়েক বছর ধরে ধাপে ধাপে বাকি চিতাগুলিকে উড়িয়ে আনা হবে। নামিবিয়া থেকে আনা একটি স্ত্রী চিতা কিডনিতে সংক্রমণের শিকার হলেও সেটি এখন সুস্থ রয়েছে।