মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা। —ফাইল চিত্র।
অসমের মতোই এনআরসি চান মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা। তাঁর দাবি, মিজোরামে থাকা চাকমারাও আদতে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী। মুখ্যমন্ত্রীর এই মতের প্রতিবাদ করেছে চাকমা সংগঠনগুলি। তাদের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর পদে থেকে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন, ভিত্তিহীন অভিযোগ দুর্ভাগ্যজনক।
জোরামথাঙ্গা চাকমাদের প্রতি ব্যক্তিগত বিদ্বেষ থেকে এমন ‘সাম্প্রদায়িক’ ও ‘উস্কানিমূলক’ মন্তব্য করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন চাকমা মানবাধিকার সংগঠনের নেতা সুহাস চাকমা। তাঁর বক্তব্য, মায়ানমার থেকে আসা লক্ষাধিক শরণার্থীকে চাম্পাইয়ে ১৯৮৯ সাল থেকে শিবির করে থাকতে দেওয়া হয়েছিল। ১৯৯৫ সালে শিবির ভাঙার পরেও কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার তাদের কাউকে জোর করে মায়ানমারে ফেরত পাঠায়নি। এ বছর জুলাইয়ে রাখাইন প্রদেশ থেকে আসা ১১০ জন শরণার্থীকে ফেরত পাঠানো হয়। অথচ মুখ্যমন্ত্রী সেই সব অনুপ্রবেশের ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেন না। আর চাকমারা মিজোরামের সুপ্রাচীন অধিবাসী তথা ভূমিপুত্র হওয়া সত্ত্বেও তাদের তাড়ানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন তিনি।
সম্প্রতি জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ে চাকমা ছাত্রদের মারধরের জেরে সব চাকমা ছাত্রছাত্রী ছাত্রাবাস ছেড়ে পালায়। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চাকমারা। তাঁদের দাবি, পূর্বতন চিটাগং হিল ট্র্যাক্টসকে ১৮৯৮ সালে ইংরেজরা অবিভক্ত অসমে লুসাই হিলের সঙ্গে মিলিয়ে দেয়। চাকমারা সেখানকার আদি বাসিন্দা। এখন সেই এলাকাই পশ্চিম মিজোরাম। অর্থাৎ চাকমারা মিজোরামের অন্যতম আদি অধিবাসী ও ভূমিপুত্র। ১৯৭২ সালে লুসাই হিল কেন্দ্রশাসিত এলাকা হওয়ার পরেই তাঁদের তফসিলভুক্ত উপজাতির মর্যাদা ও স্বশাসিত পরিষদ দেওয়া হয়েছে। চাকমাদের তাই প্রশ্ন, তার পরেও কোন যুক্তিতে মুখ্যমন্ত্রী চাকমাদের অবৈধ বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী বলেন?