সন্তান খুনে অভিযুক্ত সূচনা শেঠ। — ফাইল চিত্র।
চার বছরের ছেলেকে তিনি খুন করেননি। ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী তাঁর স্বামী। পুলিশের কাছে জেরায় বার বার এই দাবিই করে চলেছেন সূচনা শেঠ। ছেলেকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন বেঙ্গালুরুর একটি সংস্থার সিইও। তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে অসহযোগিতার অভিযোগ এনেছে গোয়া পুলিশ।
সোমবারই ছ’দিনের পুলিশি হেফাজত শেষ হয় সূচনার। গোয়ার শিশু আদালতে হাজির করিয়ে তাঁকে আরও পাঁচ দিনের জন্য হেফাজতে চায় পুলিশ। আদালত সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে সূচনাকে আরও পাঁচ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে। পুলিশ আদালতে জানায়, কী কারণে ছেলেকে খুন করেছেন সূচনা, তা এখনও বোঝা যায়নি। তা ছাড়া তাঁর প্রাক্তন স্বামী বেঙ্কট রমনের বয়ানের সঙ্গে তাঁর বয়ান মিলিয়ে দেখতে চায় পুলিশ।
এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, তদন্তে অসহযোগিতা করছেন সূচনা। বারবার অস্বীকার করেছেন যে, তিনিই খুন করেছেন ছেলেকে। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘অনেক কিছুই স্বীকার করেছেন সূচনা। স্বীকার করেছেন যে, শিশুর দেহ ব্যাগে ভরে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু খুনের কথা স্বীকার করেননি তিনি। বার বার তিনি দাবি করেছেন, শিশুটির মৃত্যুর জন্য দায়ী তাঁর স্বামী।’’ শিশুটির সঙ্গে সূচনার ডিএনএ মিলিয়ে দেখা হবে। সেজন্য সূচনার ডিএনএর নমুনা সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে বলেও আদালতে জানিয়েছে পুলিশ।
২০১৯ সালে পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন সূচনা। ২০২০ সালে স্বামী বেঙ্কটের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে তাঁর। সূচনা এবং বেঙ্কট বিবাহবিচ্ছেদের পথ বেছে নেন। ছেলে কার কাছে থাকবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হয়। কিন্তু আদালত সন্তানকে মায়ের হেফাজতে রাখারই অনুমতি দিয়েছিল। তবে প্রতি সপ্তাহে রবিবার বাবাকে ছেলের সঙ্গে দেখা করতে দিতে হবে বলেও নির্দেশ দেয় আদালত। পুলিশ সূত্রে খবর, ছেলেকে নিজের কাছে রাখলেও আতঙ্কের মধ্যে থাকতেন সূচনা। সব সময়েই তাঁর মনে হত, এই বুঝি ছেলেকে নিজের হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করবেন বেঙ্কট! সেই আতঙ্ক থেকেই তিনি শিশুপুত্রকে খুন করেছেন কি না, তার কিনারা করার চেষ্টা করছে পুলিশ। ৮ জানুয়ারি গোয়া থেকে বেঙ্গালুরু যাওয়ার পথে কর্নাটকের চিত্রদুর্গ থেকে ৩৯ বছরের সূচনাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সঙ্গে ব্যাগে ছিল ছেলের দেহ। গোয়ার অ্যাপার্টমেন্ট হোটেলে ছেলেকে খুন করেছিলেন বলে অভিযোগ।