—ফাইল চিত্র।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ‘যথেচ্ছ ভাবে’ করোনাবিধি ভঙ্গ করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আজ কেন্দ্র সাবধান করল, এত দিন এত স্বাস্থ্যবিধি মেনে যে উপকার হয়েছিল, দেশবাসীর এই আচরণে তা সবই জলে যেতে পারে। দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে এক সাংবাদিক বৈঠকে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল বলেছেন, ‘‘তৃতীয় ঢেউ নিয়ে প্রত্যেকেই কথা বলছেন কিন্তু বুঝতে পারছেন না কোভিড বিধি মানা বা না-মানার উপরে এই ঢেউয়ের ওঠা-নামা নির্ভর করবে। নীতি আয়োগের সদস্য বি কে পলও বলেছেন, বিশ্বজুড়ে চলা তৃতীয় ঢেউ থেকে সতর্ক হয়ে এ দেশেও সেই একই পরিস্থিতি আটকানো নিশ্চিত করতে হবে। আগরওয়াল জানিয়েছেন, চলতি মাসে দেশে মোট কোভিড সংক্রমণের ৭৩.৪ শতাংশই কেরল, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশায় ঘটেছে। রাজ্যের কোভিড নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্সকে সহায়তার জন্য মহারাষ্ট্র, ছত্তীসগড়, অসম, মেঘালয়, ওড়িশা, মিজোরাম, অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর, নাগাল্যান্ড ও ত্রিপুরায় দল পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
এ দিকে, উহান থেকে কেরলে আসা যে ছাত্রী দেশে প্রথম কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলেন, তিনি ফের সংক্রমিত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে আজ। মেডিক্যালের ওই পড়ুয়া দিল্লিতে আসার জন্য কোভিড পরীক্ষা করেছিলেন। তখনই জানা যায়, তিনি পজ়িটিভ।
তৃতীয় ঢেউ নিয়ে সতর্কতার মধ্যেই গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা এক লাফে অনেকটাই বেড়েছে। এর কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, মহারাষ্ট্র এবং বিহারের পরে মধ্যপ্রদেশও করোনায় মৃতের পরিমার্জিত পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। তার জেরেই গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২,০২০। তবে দৈনিক সংক্রমণ ৩২ হাজার ৯০৬ যা তিন মাসে সর্বনিম্ন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এই অবস্থায় কেন্দ্র থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য সংস্থাগুলির প্রত্যেকেই করোনার বিরুদ্ধে সুরক্ষাব্যবস্থা মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ বলেছেন, ‘‘কোভিডের তৃতীয় ঢেউ কোনও কারণ ছাড়া আসতে পারে না। আমাদের অসচেতন আচরণে তা আসতে পারে। প্রতিটি স্ট্রেনকে খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তা রুখতে ও চিকিৎসা করতে হবে।’’ গত কাল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনও (আইএমএ)বলেছে, ‘‘কোভিডের তৃতীয় ঢেউ অনিবার্য। কিন্তু পর্যটক ও তীর্থযাত্রীরা অপেক্ষা করতে পারেন।’’ এই অবস্থায় কাঁওয়ার যাত্রা বন্ধ করার জন্য গত কাল উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামিকে চিঠি লিখেছিল আইএমএ। উত্তরাখণ্ড সরকার তা বাতিল করেছে। যদিও বিভিন্ন মহলের উদ্বেগ সত্ত্বেও উত্তরপ্রদেশে আগামী ২৫ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে এই তীর্থযাত্রা।
এ পর্যন্ত দেশে ৩৮ কোটির বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে বলে সোমবার দাবি করেছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া আজ আশ্বস্ত করেছে, তৃতীয় ঢেউ আসার আগেই চলতি মাসে তারা কোভিশিল্ডের ১১ কোটি ডোজ় প্রস্তুত করার লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে পেরেছে।