পিরামিডের আদলে অসমের সেই মৈদাম। নিজস্ব চিত্র
৫২টি প্রস্তাবের সঙ্গে লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জিতল অসমের পিরামিড। এ বছর ইউনেস্কোর কাছে বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্রের তালিকায় নাম তোলার জন্য ভারত থেকে একমাত্র নাম যাচ্ছে চরাইদেও-য়ে থাকা মৈদামের। আহোম রাজত্বে স্বর্গদেও বা রাজাদের মৃত্যু হলে মিশরের পিরামিডের ধাঁচে তাঁদের প্রিয় জিনিসপত্র-সহ মৃতদেহ সমাধিস্থ করা হত। সমাধির উপরে তৈরি হত পাথর-মাটির গম্বুজাকৃতি ঢিপি। ভিতরে ঢোকার সুড়ঙ্গের মতো প্রবেশপথ থাকত। এগুলিকে বলা হত মৈদাম। ১৩-১৯ শতক পর্যন্ত চলা আহোম রাজত্বের ৩৮৬টি মৈদাম এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়েছে। তার মধ্যে ৯০টির রক্ষণাবেক্ষণ চলছে। বর্তমানে চরাইদেওয়ে থাকা মৈদামগুলি পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষেণ ও রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব দফতর দেখভাল করছে।
২০১৪ সাল থেকেই মৈদামগুলি ইউনেস্কো হেরিটেজ ক্ষেত্রের তালিকায় ঢোকানোর চেষ্টা চলছিল। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, ‘‘বারবার প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরে ২০১৯-২০ সালে ২৫ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ করে মৈদামের প্রস্তাব বিজ্ঞানসম্মত ভাবে তৈরি করার জন্য পেশাদার সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত আমাদের চেষ্টা সফল হল। দেশের কোন জায়গার নাম পাঠানো হবে, সেই সিদ্ধান্ত ছিল একান্তই প্রধানমন্ত্রীর। মোট ৫২টি প্রস্তাবের মধ্যে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছয় চারটি প্রস্তাব। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চড়াইদেওয়ের মৈদামকেই বেছে নিয়েছেন। আজ এ কথা আমায় জানান, দেশের সংস্কৃতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি।’’ এর পরে ইউনেস্কোর সদস্যেরা মৈদাম দেখতে আসবেন। হয় চড়াইদেও সরাসরি স্বীকৃতি পাবে বা ইউনেস্কো কিছু সুপারিশ করতে বা শর্ত পূরণ করতে বলতে পারে। মৈদাম বিশ্ব ঐতিহ্য ক্ষেত্র হলে কাজিরাঙা, মানসের পরে এটি রাজ্যের তৃতীয় বিশ্ব ঐতিহ্য ক্ষেত্র হবে।