নবীন পট্টনায়েক ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কেন্দ্রের কাছে টিকা নীতি বদলানোর আবেদন জানালেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। গোটা দেশে টিকার সুষম বণ্টনের জন্য কেন্দ্র নিজেই উদ্যোগী হয়ে টিকা জোগাড় করুক এবং সমস্ত রাজ্যে সরবরাহের ব্যবস্থা করুক। এ বিষয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি সমস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি দিয়ে একসঙ্গে জোট বেঁধে কাজ করার আহ্বান জানালেন নবীন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে এই বিষয়ে ফোনেও কথা বলেছেন তিনি।
সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীদের উদ্দেশে নবীন লেখেন, ‘অতিমারির পরবর্তী ঢেউ থেকে বাঁচতে একমাত্র উপায় টিকাকরণ। প্রত্যেক রাজ্যকেই এই বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। টিকা সরবরাহ বাড়াতে গিয়ে কোনও রাজ্যই যেন অন্য রাজ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় না নেমে পড়ে’।
সম্প্রতি তৃতীয় দফায় টিকা-নীতি বদলেছে কেন্দ্র। সমস্ত প্রাপ্তবয়স্কদের টিকাকরণে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। নয়া নিয়মে কেন্দ্র জানিয়েছে, সমস্ত রাজ্যই নিজেদের প্রয়োজনে সরাসরি প্রস্তুতকারী সংস্থা থেকে টিকা কিনতে পারবে। তার পরই দেশ জুড়ে টিকার চাহিদা আকাশছোঁয়া হয়। বিদেশ থেকে টিকা আমদানির বিষয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করে রাজ্যগুলি। কিন্তু ওই আমদানির ছাড়পত্র দেবে কেন্দ্রই। সেই ঝঞ্ঝাট এড়াতে বিদেশি ওষুধপ্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি সরাসরি রাজ্যের সঙ্গে টিকা সংক্রান্ত চুক্তি আগ্রহ দেখাচ্ছে না। আর দেশীয় সংস্থার পক্ষেও এই বিপুল চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। চিঠিতে এই বিষয়টি উল্লেখ করে কেন্দ্রের কাছে নবীনের আবেদন, দেশ জুড়ে টিকার জোগান নিশ্চিত করুক কেন্দ্রই। অর্থাৎ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাইরে থেকে টিকা আমদানি করে সমস্ত রাজ্যকে প্রয়োজন মতো সরবরাহের দায়িত্ব কেন্দ্রের নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
এ ছাড়াও চিঠিতে তিনি লেখেন, টিকা-নীতির বিকেন্দ্রীকরণ হওয়া উচিত, যাতে সমস্ত রাজ্যই নিজের মতো করে এই কর্মসূচিকে বাস্তবায়িত করতে পারে। টিকার জন্য অনলাইন আবেদন করতে হচ্ছে বলে প্রত্যন্ত এলাকায় অনেকেই তা করে উঠতে পারছেন না।
শেষে তিনি লেখেন, ‘সম্ভবত স্বাধীনতার পর একটি রাষ্ট্র হিসেবে সবচেয়ে বড় সঙ্কটময় পরিস্থিতির মুখোমুখি আমরা সবাই। এই পরিস্থিতিতে আমাদের প্রত্যেকের উচিত, রাজনৈতিক বা অন্য যে কোনও প্রকার দ্বন্দ্ব দূরে সরিয়ে রেখে সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করা’।