মাদ্রাজ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে মেঘালয় হাই কোর্টে বদলির সরকারি নির্দেশিকা জারি
প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণাকে চিঠি লিখেছিলেন মাদ্রাজ হাই কোর্টের আইনজীবীরা। আজ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। কিন্তু মাদ্রাজ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে মেঘালয় হাই কোর্টে বদলির সরকারি নির্দেশিকা জারি হয়ে গেল এ দিনই।
কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক জানিয়েছে, ভারতের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনার পরে সংবিধানের ২২২ নম্বর অনুচ্ছেদে বর্ণিত ক্ষমতা প্রয়োগ করে রাষ্ট্রপতি মাদ্রাজ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে মেঘালয় হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে বদলি করছেন।
বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলির বিরুদ্ধে আজ মাদ্রাজ হাই কোর্টের আইনজীবীরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানান। মাদ্রাজ হাই কোর্টের সামনে আইনজীবীরা দাবি তোলেন, প্রধান বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়কে বদলির সিদ্ধান্ত রদ করা হোক। সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের সুপারিশ নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রথমে মাদ্রাজের দু’শোর বেশি আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও কলেজিয়ামের সদস্যদের চিঠি লিখেছিলেন। এর পর মাদ্রাজ হাই কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন প্রস্তাব পাশ করে দাবি তোলে, কলেজিয়ামের সুপারিশ পুনর্বিবেচনা করা হোক। হাই কোর্টের ৩১ জন প্রবীণ আইনজীবী (সিনিয়র অ্যাডভোকেট) কলেজিয়ামকে চিঠি লিখেছেন। এ দিনের বিক্ষোভেও প্রবীণ আইনজীবীরা যোগ দেন।
বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় মাদ্রাজ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব নিয়ে একাধিক মামলায় কেন্দ্রীয় সরকারকে তোপ দেগেছিলেন। আজ মাদ্রাজ হাই কোর্ট অ্যাডভোকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, প্রবীণ আইনজীবী জি মোহনকৃষ্ণন বলেন, ‘‘মাত্র দশ মাসের মধ্যে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বদলির সিদ্ধান্তে ভুল বার্তা যাচ্ছে।’’ মাদ্রাজ হাই কোর্টে নিযুক্ত কেন্দ্রের সহকারী সলিসিটর জেনারেল, বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জি কার্তিকেয়নও প্রতিবাদ বিক্ষোভে যোগ দেন।
এ বিষয়ে আজ কলম ধরেছেন মাদ্রাজ হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কে চন্দ্রু। আইনজীবী হিসেবে যাঁর লড়াই নিয়ে তৈরি সিনেমার দৌলতে যিনি এখন পরিচিত নাম। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি চন্দ্রুর প্রশ্ন, মাদ্রাজ হাই কোর্ট থেকে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে বদলির সিদ্ধান্ত কি রুটিন না কি শাস্তিমূলক পদক্ষেপ? তাঁর যুক্তি, সংবিধানের ২২২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনও বিচারপতিকে এক হাই কোর্ট থেকে অন্য হাই কোর্টে বদলি করা যায়। এ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম কেন্দ্রের কাছে তাঁকে বদলির সুপারিশ করেছে। কেন্দ্র সরকারি নির্দেশিকা জারি করার আগে কলেজিয়ামের কাছে প্রাসঙ্গিক নথি চাইতে পারে। সন্তুষ্ট না হলে কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার কথাও বলতে পারে।