Criminal law

সন্ত্রাসের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত জাল নোট

ফৌজদারি আইন স‌ংক্রান্ত নতুন চেহারায় তিনটি বিল লোকসভায় পেশ করে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির সুপারিশ মেনে বেশ কিছু নতুন ধারা ওই বিলগুলিতে অন্তর্ভুক্ত করায় পুরনো তিনটি বিল আজ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:২৩
Share:

—প্রতীকী ছবি।

ভারতীয় ন্যায় সংহিতা সংক্রান্ত নয়া বিলে জাল নোটের কারবারকেও সন্ত্রাসের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করল নরেন্দ্র মোদী সরকার।

Advertisement

আজ ফৌজদারি আইন স‌ংক্রান্ত নতুন চেহারায় তিনটি বিল লোকসভায় পেশ করে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির সুপারিশ মেনে বেশ কিছু নতুন ধারা ওই বিলগুলিতে অন্তর্ভুক্ত করায় পুরনো তিনটি বিল আজ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তার পরে নতুন ওই তিনটি বিল লোকসভায় পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৃহস্পতিবার ওই বিলটি নিয়ে আলোচনা শুরু হবে। সম্ভবত শুক্রবার বিলটি নিয়ে বিতর্কে জবাব দেবেন শাহ।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, একাধিক পরিবর্তন করা হয়েছে ওই বিলগুলিতে। তার মধ্যে ভারতীয় ন্যায় (দ্বিতীয়) সংহিতা বিলে সন্ত্রাসবাদের সংজ্ঞায় আর্থিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যাতে বলা হয়েছে যদি কেউ দেশের ঐক্য, সংহতি, সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা বা আর্থিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে বা করার চেষ্টা করে তবে তা সন্ত্রাসবাদ হিসেবে গণ্য করা হবে। আগের বিলে আর্থিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার উল্লেখ ছিল না। কিন্তু নতুন বিলের ১১৩ নম্বর ধারায় আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে, যদি কোনও ব্যক্তি নকল নোট ছাপিয়ে, বিদেশ থেকে জাল নোট এনে তা দেশীয় বাজারে ছড়িয়ে দিয়ে দেশের আর্থিক ভিত্তির ক্ষতি করার চেষ্টা করে তাহলে তা সন্ত্রাসবাদ হিসেবে গণ্য করা হবে। যারা এ ধরনের সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকবে তাদের মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হবে। যারা জেনেশুনে এ ধরনের দেশবিরোধী চক্রান্ত বা সন্ত্রাসবাদী কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকবে বা উৎসাহ দেবে তাদের পাঁচ বছর থেকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হবে।

Advertisement

ভারতীয় দণ্ডবিধি তৈরি হয়েছিল ব্রিটিশ জমানায়, ১৮৬০ সালে। ফৌজদারি কার্যবিধি তৈরি হয় ১৯৭৩-এ। সাক্ষ্য আইন তৈরি হয় ১৮৭২-এ। ওই তিন আইন বদলে এ বার ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা ও সাক্ষ্য অধিনিয়ম বিলগুলি গত ১১ অগস্ট লোকসভায় পেশ করেই তা সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তিন মাস একাধিক বৈঠকের পরে গত ৬ নভেম্বর বিরোধীদের আপত্তি সত্ত্বেও ওই তিনটি বিল গৃহীত হয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে। আজ অমিত শাহ নতুন বিলগুলি পেশ করতে গিয়ে বলেন, ‘‘বেশ কিছু ব্যাকরণগত ভুল রয়েছে প্রথম বিলটিতে। এ ছাড়া সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কিছু সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় নতুন বিলগুলি আজ ফের পেশ করা হচ্ছে।’’ নতুন বিলগুলি হল, ভারতীয় ন্যায় (দ্বিতীয়) সংহিতা,২০২৩, নাগরিক সুরক্ষা (দ্বিতীয়) সংহিতা, ২০২৩ ও ভারতীয় সাক্ষ্য দ্বিতীয় বিল, ২০২৩।

এ ছাড়া ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা (দ্বিতীয়) সংহিতাতেও বেশ কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। জামিন ও জামিনের বন্ড সংক্রান্ত ৪৭৯ ধারা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৪৩(৩) ধারায় আর্থিক দুর্নীতিতে আটক ব্যক্তিদের হাতকড়া না লাগানোর প্রস্তাব মেনে নিয়েছে কেন্দ্র। ছোটখাটো অপরাধের ক্ষেত্রে জেলে না পাঠিয়ে সামাজিক কাজ করার যে সুপারিশ আনা হয়েছিল তাতে অভিযুক্ত কত দিন সামাজিক কাজ করতে হবে সেই নির্দেশ দিতে পারবেন প্রথম শ্রেণির কোনও ম্যাজিস্ট্রেট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement