টুইটার নিয়ে বিতর্ক চলছেই। ছবি: রয়টার্স
কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে টুইটারের লড়াইয়ের আগুনে রোজই যেন ঘি পড়ছে। একাধিক অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করে দেওয়ার কেন্দ্রীয় প্রস্তাব বুধবারই পাশ কাটিয়েছিল টুইটার। তা নিয়ে ক্ষুব্ধ কেন্দ্রএ বার জানিয়েছে, দেশে ব্যবসা করতে গেলে ভারতীয় আইনকে মেনে চলতে হবে। সংস্থার নিজের সংবিধানে যা খুশি লেখা থাকুক, ব্যবসা করতে গেলে মানতে হবে ভারতের আইন।
কেন্দ্রীয় সরকারবলেছে, ‘‘সংসদে পাশ হওয়া আইন যে কোনও বাণিজ্যিক সংস্থাকেই মেনে চলতে হয়। এখন না মেনে পরে আইন মানলে, তার কোনও অর্থ থাকে না।’’ উঠে এসেছে আমেরিকার ক্যাপিটল হিল হিংসার প্রসঙ্গও। কেন্দ্রের দাবি, ‘‘ভারত ও আমেরিকার ক্ষেত্রে ভিন্ন আইন প্রয়োগ করছে টুইটার, এই ঘটনা যথেষ্ট দুর্ভাগ্যজনক।’’
২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষক বিক্ষোভে দিল্লি জুড়ে তাণ্ডবের পিছনে অনেকেই নেটমাধ্যমকে দোষ দিয়েছেন। সেই সূত্রে টুইটারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বুধবার সংস্থার সঙ্গে বৈঠকে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে মোট ১১৭৮টি টুইটার অ্যাকাউন্ট ভারতে নিষিদ্ধ করার দাবি করা হয়েছে। যদিও টুইটার পাল্টা জানিয়েছে, কেন্দ্রের প্রস্তাব ভারতের সংবিধান বিরুদ্ধ। তাই সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার বদলে ভারতের কয়েকটি টুইটার অ্যাকাউন্টে লাগাম পড়াবে সংস্থা।
এই প্রতিক্রিয়াতে চটেছে মোদী সরকার। হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ভারতের সংবিধান বাক্স্বাধীনতার কথা বললেও তার কয়েকটি নিয়ম আছে। সংবিধানের ১৯(২) ধারায় বলা হয়েছে বাক্স্বাধীনতা ‘পূর্ণ’ নয়। পাশাপাশি টুইটারকে সতর্ক করে কেন্দ্র বলেছে, ‘‘কোনও সংস্থা নিজস্ব সংবিধান মেনে ব্যবসা করতেই পারে। কিন্তু ভারতের সংসদে পাশ হওয়া আইনকে পাশ কাটিয়ে যেতে পারে না। ভারতীয় সংবিধানকে মেনে চলতে দেশে ব্যবসাকারী সব সংস্থা বাধ্য। দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও শ্রদ্ধা করতে হবে।’’ এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের কথাও উল্লেখ করেছে কেন্দ্র।
কেন্দ্রের টুইটার অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার টুইটার জানায়, বাক্স্বাধীনতার পক্ষেই তারা সওয়াল করে যাবে। ভারতীয় আইন লঙ্ঘন না করে অ্যাকাউন্টগুলোকে কী ভাবে নিরাপদ রাখা যায়, সে চেষ্টাও চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছে টুইটার। আত্মপক্ষ সমর্থনে টুইটারের যুক্তি ছিল, ‘হ্যাশট্যাগ’ সংক্রান্ত যে টুইটগুলো সমাজের ক্ষতি করতে পারে, সেগুলো যাতে ‘ট্রেন্ড’ না হয় সেই ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।