প্রতীকী ছবি।
কৃষি আইন নিয়ে এখনও দোষারোপের রাজনীতিই চলেছে। বুধবার পরোক্ষে কৃষি আন্দোলনকারীদের কৌরব এবং কংগ্রেসকে তাদের ‘শকুনি মামা’ বলে মন্তব্য করলেন বিজেপি সাংসদ রমেশ বিধুরি।
ওই সাংসদের কথায়, তীব্র শীতের পরোয়া না করে যাঁরা কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, তাঁরা আদপে কৃষকই নন। তিনটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর থেকে পাওয়া অর্থের বিনিময়েই প্রতিবাদ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। আর তাঁদের ‘শকুনি মামা’র মতো ইন্ধন দিচ্ছে কংগ্রেস।
ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা বুধবারই বলেছিলেন, ‘‘কৃষি আইন তো কোনও ধর্মগ্রন্থের থেকে উদ্ধৃত বাণী নয়, যে তাতে বদল আনা যাবে না!’’ তবে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যে বদল নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তিত নয়, তা বুঝিয়ে দিলেন বিধুরি। বুধবার লোকসভার অধিবেশনের শুরুতে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর ধন্যবাদ জ্ঞাপক জবাবি বক্তৃতা করেন বিধুরি। কৃষক আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘দিল্লির গাজিপুর ও সিঙ্ঘু সীমান্তে যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তারা আসলে সিপিআই ও সিপিএমের নেতা-কর্মী-সদস্য। দেশের তিনটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এই আন্দোলন চালানোর জন্য টাকা যোগাচ্ছেন তাঁদের।’’ তবে ওই তিন রাজ্য কী কী বা তাদের মুখ্যমন্ত্রীদের নাম বলেননি বিধুরি। যদিও ‘কৃষক আন্দোলনকারী সাজা বিক্ষোভকারী’দের ইন্ধন যোগানোর জন্য কংগ্রেসকে শকুনি মামা বলে মন্তব্য করে বিধুরি বলেন, ‘‘কংগ্রেস শকুনি মামার মতো ‘কৃষক’দের উস্কে দেওয়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।’’
ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক বলেছিলেন, ‘‘সরকারের কাছে আমার একটাই অনুরোধ, কৃষি আইন তো কোনও ‘খুদাই কিতাব’ (ধর্মগ্রন্থ) নয়, যে তাতে বদল আনা যাবে না! যাঁদের জন্য এই আইন, তাঁদেরই যখন এতে মত নেই তখন সরকার নমনীয়তা দেখাবে না কেন? কেন কৃষকদের কথা শুনবে না, তাঁদের সঙ্গে কথা বলবে না সরকার? কেন্দ্রের কাছে আমি জোড়হাতে অনুরোধ করব, আমরা প্রত্যেকে এই দেশের মানুষ। দেশের প্রতি যদি আমাদের শ্রদ্ধা থেকে থাকে তবে দেশবাসীর প্রতিও শ্রদ্ধা থাকা উচিত। আর তাঁদের সমস্যা হলে তার সমাধান করার দায়িত্বও নেওয়া উচিত।’’
আবদুল্লা বলেন, ‘‘রাম কারও একার নয়। তেমনই কোরানও কোনও একটি বিশেষ ধর্মের বা সম্প্রদায়ের নয়। তাই এদের নামে বিভেদ তৈরি করা বন্ধ হোক। যে ভাবে জওহরলাল নেহরুর নামে কুৎসা করছেন এনডিএ-র সাংসদরা তা দেখে খারাপ লাগছে আমার। সর্দার প্যাটেল, ইন্দিরা গাঁধী, রাজীব গাঁধীর দিকে অভিযোগের আঙুল তোলা হচ্ছে এটাও বন্ধ হওয়া দরকার। ভারতের ঐতিহ্য নিয়ে মাঝে মধ্যেই অনেক কথা বলে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু, তাদের সাংসদরা প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীদের নামে যে ভাবে কুৎসা করতে নেমেছেন, তা-ও কিন্তু আমাদের ঐতিহ্য নয়।’’
লোকসভায় এদিন রমেশ বিধুরির ‘শকুনি মামা’ মন্তব্যকে সমর্থন করেন বিজেপির রীতা বহুগুণা জোশী। অন্যদিকে, অখিলেশ যাদব প্রধানমন্ত্রীর আন্দোলনজীবী মন্তব্যকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘কৃষক আন্দোলন সমর্থনকারীদের যদি আন্দোলনজীবী বলা হয়, তবে যাঁরা আজকাল রাজ্যে রাজ্যে গিয়ে চাঁদা আদায় করছেন, তাঁদের কী বলব? চাঁদাজীবী?’’