প্রতীকী ছবি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে দাবি করেছিলেন, গ্রামাঞ্চলের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের ৯ হাজার কোটি টাকার বেশি পাওনা রয়েছে। মোদী সরকারের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের পাল্টা দাবি, রাজ্যের কাছে এই প্রকল্পে প্রায় ১,৪০০ কোটি টাকা পড়ে রয়েছে, যা খরচই হয়নি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় রাজ্যের ২ হাজার কোটি টাকার বেশি বকেয়া পাওনা রয়েছে। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের হিসেব আবার উল্টো কথা বলছে। কেন্দ্রের হিসেব অনুযায়ী, রাজ্য সরকারের কাছেই খরচ না-হওয়া ২৭৮ কোটি টাকারও বেশি পড়ে রয়েছে।
গত সপ্তাহে দিল্লিতে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রীর হাতে রাজ্যের বকেয়া পাওনা সম্বলিত একটি চিঠিও তুলে দেন তিনি। চিঠি অনুযায়ী, কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের মোট পাওনা ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ)-এ ৯৩২৯ কোটি টাকা ও প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় রাজ্যের ২১০৫ কোটি টাকা পাওনা বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই দু’টি প্রকল্পেই নাম বদলে ‘প্রধানমন্ত্রী’-র বদলে ‘বাংলা’ বসিয়ে দেওয়ায় কেন্দ্র টাকা আটকে রেখেছিল। রাজ্য এখন পিছু হটেছে। প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের নির্দেশিকা মেনে চলার আশ্বাস দিয়েছেন।
দুই ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের সূত্রের বক্তব্য, কোনও প্রকল্পে রাজ্যের জন্য বরাদ্দ টাকা সবটাই একসঙ্গে ছেড়ে দেওয়া হয় না। কতখানি অর্থ ছাড়া হবে, তা অনেকগুলি বিষয়ের উপরে নির্ভর করে। এক, রাজ্য কতটা কাজের প্রস্তাব দিয়েছে। দুই, সেই কাজ কতটা এগিয়েছে। তিন, কতটা কাজ বাকি। চার, রাজ্যের কাজ করার কতটা ক্ষমতা। পাঁচ, রাজ্যের কাছে কত অর্থ খরচ না হয়ে পড়ে রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এক কর্তা বলেন, “এমন হতেই পারে, রাজ্যকে কোথাও ১০০ টাকা দেওয়ার কথা। তার মধ্যে মাত্র ২০ টাকা ছাড়া হয়েছে। তার মানে বাকি ৮০ টাকা পাওনা এখনই রাজ্যকে দিয়ে দিতে হবে, এমন নয়। যেমন যেমন কাজ এগোবে, রাজ্যের হাতে কতখানি টাকা থাকবে, তা দেখে টাকা ছাড়া হয়। সব রাজ্যের ক্ষেত্রেই এক নিয়ম।”
গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ)-এ গ্রামের সকলের জন্য বাড়ির প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গকে এখনও পর্যন্ত ৩৪.৮২ লক্ষ বাড়ি তৈরির লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে। ২০ জুলাই পর্যন্ত তৈরি হয়েছে ৩৩.৪০ লক্ষ বাড়ি। রাজ্যের কাছে ১৪২৯ কোটি টাকা পড়ে রয়েছে। একই ভাবে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় রাজ্যের কাছে পড়ে রয়েছে ২৭৮ কোটি টাকা।