—ফাইল চিত্র
টাউটে ঘূর্ণিঝড়ের পরেই গুজরাত সরকারকে হাজার কোটি টাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী সরকার। ইয়াসের পরে ৫০০ কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় ওড়িশা সরকারকে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডের জন্য ক্ষতির পরিমাণ সাপেক্ষে ৫০০ কোটি টাকার আর্থিক সাহায্য করা হবে বলে জানানোয় রাজ্যের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় দলের সমীক্ষা-সফরের আগেই রাজ্যের জন্য বরাদ্দ কী ভাবে স্থির করা সম্ভব?
কেন্দ্রীয় দল কবে পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সফরে যাবে, তার দিনক্ষণ এখনও জানায়নি কেন্দ্র। তবে সূত্রের মতে, বর্তমানে একটি দল গুজরাতের ক্ষয়ক্ষতি পরিমাপ করতে প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যে সফররত। ওই দল ফেরার পরেই পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ডে সম্ভবত জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে কেন্দ্রীয় দল পাঠানো হবে। ওই কেন্দ্রীয় দলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের যুগ্মসচিব বা অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের কোনও আমলা ছাড়াও কৃষি, বিদ্যুৎমন্ত্রক, মৎস দফতর, গ্রামোন্নয়নমন্ত্রক, সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের অফিসারেরা থাকবেন। তাঁরা কলকাতায় রাজ্যের প্রশাসনিক আমলাদের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও ইয়াস বিধ্বস্ত জেলা ঘুরে দেখবেন। বৈঠক করবেন জেলাশাসকদের সঙ্গেও।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, যে ভাবে আমপানের পরে পশ্চিমবঙ্গে এসেই আর্থিক সাহায্যের কথা প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, এ বারে তা কেন করলেন না? সরকারের একটি সূত্রের দাবি, ইয়াস ঘূর্ণিঝড় মূলত ওড়িশায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি করেছে। সেই কারণে ওড়িশার জন্য তৎক্ষণাৎ আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী। গত বছর আমপান ঘূর্ণিঝড়ের মূলত শিকার হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ। তাই সে সময়ে পশ্চিমবঙ্গের জন্য হাজার কোটি টাকার অর্থ সাহায্য ঘোষণা করা হয়েছিল। এর পিছনে কোনও রাজনীতি নেই।
সুখেন্দুবাবু অবশ্য অভিযোগ করেছেন, টাউটে ঘূর্ণিঝড়ের পরে প্রধানমন্ত্রী গুজরাতে যখন গিয়েছিলেন, সে সময়ে কিন্তু গুজরাতের বিরোধী দলনেতাকে ডাকা হয়নি। এ ক্ষেত্রে রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে ডাকা হল স্রেফ রাজনীতি করার উদ্দেশ্যে। ঘূর্ণিঝড়ের পরে যখন দলমত নির্বিশেষে সকলের ত্রাণের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত, তখন প্রধানমন্ত্রী হারের জ্বালা ভুলতে ‘প্রতিশোধের রাজনীতি’ করছেন বলে তাঁর অভিযোগ। সাংসদের মতে, কেন্দ্রীয় দলের সমীক্ষার আগে যে ভাবে ক্ষতিপূরণের অর্থের পরিমাণ স্থির করে দেওয়া হয়েছে, তা অতীতে হয়েছে বলে মনে হয় না। এর ফলে কেন্দ্রীয় দলের উপর চাপ থাকবে রাজ্যের ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার মধ্যে দেখানোর। ফলে উপেক্ষিত হবে রাজ্যের প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত দাবি।