ইডির বিরুদ্ধে এ বার সরব হলেন ছত্তীসগঢ় কংগ্রেস নেতৃত্ব। ফাইল চিত্র।
সিবিআই-ইডির ‘অপব্যবহার’ নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ নতুন নয়। ভোটের আগে তেমনই এক অভিযোগ নিয়ে এ বার সরব হলেন ছত্তীসগঢ় কংগ্রেস নেতৃত্ব। কংগ্রেসের অভিযোগ, ‘অপারেশন লোটাস’-এর কাজ করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)! যদিও এই নিয়ে পাল্টা সরব হয়েছে বিজেপি।
চলতি বছরেই ছত্তীসগঢ়ে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে সম্প্রতি ছত্তীসগঢ়ের একাধিক কংগ্রেস নেতার বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে ইডি। গত ২৮ মার্চ খনি এবং কয়লা কেলেঙ্কারিতে রাইপুরে কংগ্রেস নেতা রামগোপাল আগরওয়ালের অফিস, শিল্পপতি কমল সারদার বাড়িতে অভিযান চালায় ইডি। এছাড়াও রাইপুরের মেয়র আইজাজ ধেবর, আইএএস অনিল তুতেজা, ব্যবসায়ী বলদেব সিংহ ভাটিয়াদের বাড়িতেও অভিযান চালিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যা ঘিরে সরগরম সে রাজ্যের রাজনীতি। ইডি, সিবিআইকে ‘রাজনৈতিক কারণে’ ব্যবহার করার অভিযোগে সরব বাংলার শাসকদল তৃণমূলও। পশ্চিমবঙ্গে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত চালাচ্ছে ইডি-সিবিআই। গ্রেফতার করা হয়েছে বাংলার শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে অতীতে বিধানসভায় নিন্দা প্রস্তাব এনেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এ বার একই অভিযোগে সরব হলেন ছত্তীসগঢ়ের কংগ্রেস নেতৃত্ব। ঘটনাচক্রে, এমন একটা সময় এই ঘটনা ঘটল, যখন রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ করার প্রতিবাদে প্রকাশ্যেই কংগ্রেসের পাশে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল। পরের বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে সব দলকে নিয়ে জোটের বার্তাও দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী।
ছত্তীসগঢ়ে বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস নেতাদের বাড়ি-অফিসে ইডির হানার নেপথ্যেও ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য’ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। সোমবার এই নিয়ে যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করেন ছত্তীসগঢ়ের মিনারেল ডেভলেপমেন্ট কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান গিরিশ দেওয়ানগান, রাইপুরের মেয়র আইজাজ ধেবর, আবাসন এবং অন্যান্য নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের উন্নয়নমূলক বোর্ডের চেয়ারম্যান সুশীল সানি আগরওয়াল এবং ব্যবসায়ী অচল ভাটিয়া। ওই সাংবাদিক বৈঠক থেকেই তাঁরা অভিযোগ করেন, ‘‘যে ভাবে ইডি কাজ করছে, দেখে মনে হচ্ছে, যেন তারা অপারেশন লোটাসের কাজ করছে।’’ বিধায়কদের ভাঙিয়ে নিয়ে বিজেপি সরকার গড়েছে বলে অতীতে অভিযোগ করেছিলেন বিরোধীরা। একেই বিরোধীরা ‘অপারেশন লোটাস’ বা ‘অপারেশন পদ্ম’ নামে চিহ্নিত করছেন।
সানি আগরওয়াল অভিযোগ করেছেন, এই ধরনের অভিযানের হাত থেকে বাঁচতে তাঁকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা বলেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। গিরিশ দেওয়ানগান বলেছেন, ‘‘ছত্তীসগঢ়ে একাধিক এলাকায় অভিযান চালিয়েছে ইডি। কিন্তু, কী পাওয়া গিয়েছে, তা নিয়ে কিছুই জানায়নি।’’ তাঁর অভিযোগ, নিজেদের রাজনৈতিক প্রভুদের অঙ্গুলিহেলনে ‘অপারেশন লোটাস’-এর কাজ করছে ইডি।
যদিও কংগ্রেসের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিজেপি বিধায়ক ব্রিজমোহন আগরওয়াল জানিয়েছেন যে, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দুর্নীতি রোখার বার্তা দিয়েছেন। সেই কারণেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সোমবার আরও এক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হয়ে বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সিবিআইয়ের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ন্যায় এবং সুবিচারের ‘ব্র্যান্ডে’ পরিণত হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। দুর্নীতির সঙ্গে লড়াইয়ে সরকার সিবিআইয়ের পাশে আছে বলেও বার্তা দিয়েছেন মোদী।