পূজা খেড়কর। ছবি: এক্স (পূর্বতন টুইটার)।
বিতর্কিত আইএএস পূজা খেড়করের বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একক সদস্যের একটি প্যানেল তৈরি করেছিল কেন্দ্র। শনিবার সেই প্যানেল কর্মী ও প্রশিক্ষণ বিভাগ (ডিওপিটি)-এর কাছে পূজার সম্পর্কে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে।
কিছু দিন আগে ক্ষমতার অপব্যবহার, ভুয়ো শংসাপত্র ব্যবহার করে সংরক্ষণের সুযোগ নেওয়া-সহ বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছিল ২০২৩ ব্যাচের প্রশিক্ষণরত আইএএস পূজার বিরুদ্ধে। সে সব অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তদন্তটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ডিওপিটির অতিরিক্ত সচিব মনোজ দ্বিবেদী। তবে কী রয়েছে সেই রিপোর্টে, তা এখনও জানা যায়নি।
আপাতত পূজার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন বা ইউপিএসসি। তাঁর প্রশিক্ষণ অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। এমনকি তিনি আর কখনও এই পরীক্ষায় বসতে পারবেন না। তাঁর নিয়োগ বাতিল করতে ইউপিএসসির তরফে ইতিমধ্যেই শোকজ় নোটিস জারি করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, পূজার বিরুদ্ধে ভুল তথ্য এবং ভুয়ো পরিচয়পত্রের সাহায্যে সংরক্ষণের সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছে ইউপিএসসি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখা।
কয়েক সপ্তাহ আগে মহারাষ্ট্রের পুণের সহকারী জেলাশাসক হিসাবে নিযুক্ত পূজা খেড়করের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের ব্যক্তিগত ব্যবহারের গাড়িতে মহারাষ্ট্র সরকারের স্টিকার, লালবাতি ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া অতিরিক্ত জেলাশাসকের কক্ষ ‘দখল’ করা এবং জেলাশাসকের সহকারীর কাছে বেআইনি দাবিদাওয়া পেশ করে সেই দাবি পূরণের জন্য হুমকি দেওয়ার অভিযোগও ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। সেখান থেকে বিতর্কের সূত্রপাত। তার পর পূজার একের পর এক ‘কীর্তি’ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে।
ক্রমে জানা যায়, ইউপিএসসি পরীক্ষা দেওয়ার আগে এমবিবিএস পড়ার সময়ে ভুয়ো শংসাপত্র দাখিল করে নিজেকে ‘অনগ্রসর’ (ওবিসি) শ্রেণিভুক্ত বলে দেখিয়েছিলেন পূজা। ২০০৭ সালে মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সময়ে জাতিগত সংরক্ষণের সুবিধা নিতে ওবিসি নোম্যাডিক ট্রাইব-৩ ক্যাটেগরিতে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি, যা শুধুমাত্র বানজারি সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত থাকে। সংরক্ষণের সুবিধা পেতে ভুয়ো জাতিপরিচয়গত শংসাপত্রের পর এ বার ভুয়ো প্রতিবন্ধী শংসাপত্রের আবেদন করেন তিনি! দু’বার ইউপিএসসি পরীক্ষায় সেই ভুয়ো মেডিক্যাল সার্টিফিকেট জমাও দেন— এক বার দৃষ্টিশক্তির সমস্যার কথা উল্লেখ করে, আর এক বার মানসিক অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে। তবে নিয়োগের আগে ২০২২ সালে এমস-এ প্রতিবন্ধকতার পরীক্ষার বন্দোবস্ত করা হলেও ছ’বার নানা অজুহাতে পূজা তা এড়িয়ে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এত গলদ সত্ত্বেও তিনি কী ভাবে চাকরি পেলেন, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।