Indian Army

আফগান-রাশ চলে যাবে পাকিস্তানে, শঙ্কায় দিল্লি

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, বাইডেন প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের ফলে শুধু ভারত নয়, গোটা দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ারই সমস্যাসঙ্কুল এলাকাগুলি বিপদের মুখে পড়বে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২১ ০৬:১৯
Share:

ফাইল চিত্র।

আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে আমেরিকা এবং ন্যাটোর অধীনস্থ সেনাবাহিনী (প্রায় হাজার দশেক) প্রত্যাবর্তন করতে চলেছে নিজ নিজ দেশে। ভারতের আশঙ্কা, এর ফলে যে ফাঁকা জায়গা তৈরি হবে তার দ্রুত দখল নিতে এগোবে পাকিস্তানের আইএসআই-নিয়ন্ত্রণাধীন হাক্কানি গোষ্ঠী। পাশাপাশি লস্কর-ই-তইবা এবং জইশ-ই-মহম্মদের মতো ভারত-বিরোধী সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিও মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে কাবুলে।

Advertisement

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, বাইডেন প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের ফলে শুধু ভারত নয়, গোটা দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ারই সমস্যাসঙ্কুল এলাকাগুলি বিপদের মুখে পড়বে। ভারতের কাছে বিষয়টি কিছুটা অপ্রত্যাশিতও। কারণ মার্চ মাসে আমেরিকার বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন যে প্রস্তাবটি দিয়েছিলেন, তা এখন কার্যত তামাদি হয়ে গেল। সেখানে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহারের শর্ত হিসাবে বলা হয়েছিল, ৯০ দিনের সংঘর্ষ-বিরতি, রাষ্ট্রপুঞ্জের অধীনে শান্তি আলোচনা, আমেরিকা-রাশিয়া-পাকিস্তান-ইরান-ভারতকে নিয়ে ঐকমত্য তৈরি এবং তুরস্কে তালিবান ও আফগান সরকারকে এক টেবিলে নিয়ে এসে অন্তর্বর্তী চুক্তি করা।

ব্লিঙ্কেনের ওই উদ্যোগের শরিক ছিল ভারত। কিন্তু এখন তাদের আফগানি নীতি কিছুটা থমকে রয়েছে বলেই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। গত কালই বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘ভারত ঐক্যবদ্ধ, গণতান্ত্রিক এবং সার্বভৌম আফগানিস্তানকে সমর্থন করে। সে দেশে হিংসা বাড়ার ঘটনায় আমরা গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। নিশানা স্থির করে হত্যার ঘটনা ঘটছে আফগানিস্তানে। ভারত অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ সংঘর্ষবিরতি দাবি করছে।’ আইএসআইয়ের সঙ্গে গাঁটছড়া বেধে তালিবান গোষ্ঠী একাধিক বার ভারতের নিরাপত্তাকে চ্যালেঞ্জ করেছে অতীতে। আমেরিকার সেনা সরিয়ে নেওয়ার পর আফগানিস্তানের রাজনীতি এবং বাস্তবতায় ভারতের ভূমিকাও কিছুটা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়বে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রভাব বাড়বে রাওয়ালপিন্ডির।

Advertisement

সম্প্রতি দিল্লির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক আলোচনাচক্র ‘রাইসিনা সংলাপে’ চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়তও সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কাবুলে একটি শূন্যতা তৈরি হবে, যার সুযোগ নেবে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন।’’ এই জঙ্গি সংগঠনগুলিকে ভিতর থেকে মদত দেবে তালিবান এবং বাইরে থেকে পাকিস্তান। ফলে তারাই হয়ে উঠবে আফগানিস্তানের ভাগ্যবিধাতা— এমনই মনে করছে সাউথ ব্লক।

কূটনৈতিক শিবিরের মতে, আফগানিস্তানে তালিবান ক্ষমতায় এলে ভারতের যাতে নিরাপত্তা ক্ষেত্রে কোনও বাড়তি ঝুঁকি তৈরি না হয়, সেটা নিশ্চিত করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। সে ক্ষেত্রে শুধু আফগানি মুখপাত্রদের মাধ্যমে নয়, সরাসরি তালিবানের সঙ্গে আলোচনার পরামর্শও দিচ্ছেন কূটনীতিবিদদের একাংশ। আফগানিস্তানে নিজেদের ভূমিকা এবং প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তালিবানের সঙ্গে কী ভাবে দর কষাকষি করে সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছনো যায়, এ বার সেটাই মোদী সরকারের বিদেশনীতির প্রধান দিক হয়ে উঠতে চলেছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট শিবির। সে ক্ষেত্রে চিন এবং রাশিয়ার পৃষ্ঠপোষকতা তাদের জন্য কতটা থাকবে তারও একটা আগাম আন্দাজ পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement